বুধবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৭:৪০:৫৩

আগের মত বুদ্ধি নেই আইকন নাসিরের

আগের মত বুদ্ধি নেই আইকন নাসিরের

রানা আব্বাস : কদিন আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে মুস্তাফিজুর রহমানের করা সেই ওভারের দৃশ্যটা মনে আছে? জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেট হিসেবে ব্যাট করছিলেন মুজারাবানি। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা স্লিপ থেকে গালি—৮ ফিল্ডার দিয়ে ঘিরে ফেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানকে! বাংলাদেশ অধিনায়ক পরে জানিয়েছিলেন, মুস্তাফিজের হ্যাটট্রিক বলটাতে ৮ ফিল্ডার সাজানোর বুদ্ধি দিয়েছিলেন আসলে নাসির হোসেন। সেবার সবাই বাহবা দিয়েছিল নাসিরকে। ওয়ানডেতে এমন আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং দেখা এমনিতেই বিরল। সেটিও দেখা গেল নাসিরের বুদ্ধি বদৌলতে। করে দেখাল বাংলাদেশই! আজ সিলেট সুপারস্টারসের বিপক্ষে স্নায়ুক্ষয়ী শেষ ওভার কে বল করবেন, ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা পরামর্শ চেয়েছিলেন ‘আইকন’ নাসিরের কাছে। সুযোগ ছিল ইয়াসির শাহ-ফরহাদ রেজার একজনকে বেছে নেওয়ার। নাসিরের ‘ভোট’ গেল ফরহাদের দিকেই। কিন্তু উইকেটে শহীদ আফ্রিদি, শেষ ওভারে দরকার ১০ রান—এমন পরিস্থিতিতে ফরহাদের চেয়ে স্পেশালিস্ট একজন বোলারকে দিয়ে করালেই ​ভালো হতো কি না, ম্যাচ শেষে এমন প্রশ্ন উঠল। ফরহাদকে বেছে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন নাসির। উইকেটে দুই পাকিস্তানি ​ব্যাটসম্যান ছিল জন্যই আরেক পাকিস্তানি বোলারকে দিয়ে বল করানোর বদলে ফরহাদকেই বেছে নিতে চেয়েছিলেন বলে জানালেন, ‘সাঙ্গাকারা জিজ্ঞেস করেছিল, শেষ ওভার ইয়াসির করবে, নাকি ফরহাদ। আমি ফরহাদের কথা বলেছি। ইয়াসিরকে করানো হয়নি। কারণ, ব্যাটিংয়ে ছিল সোহেল তানভীর ও শহীদ আফ্রিদি। মনে হয় না, ফরহাদ ভাই খারাপ বল করছে। আফ্রিদি ভালো খেলছে।’ প্রথম তিনটি বল দারুণই করেছিলেন ফরহাদ। কিন্তু চতুর্থ ও পঞ্চমটি দিলেন ফুলটস। আফ্রিদি দুটো বলই আছড়ে ফেললেন বাউন্ডারির বাইরে। বিফলেই গেল নাসিরের ‘বুদ্ধি’! শেষ ওভারে ফরহাদের বোলিংয়ের কথা বললে স্মৃতিতে ফিরে আসবে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সেই টি-টোয়েন্টির কথাও। সেদিন শেষ ওভারে দরকার ছিল ৯ রান। মাশরাফি বল তুলে দিয়েছিলেন ফরহাদের হাতে। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। ফরহাদ দিয়েছিলেন শর্ট বল। বাউন্ডারি মেরে দল জিতিয়েছিলেন সচিত্রা সেনানায়েকে। টুর্নামেন্টজুড়ে ব্যাটিং ঠিকঠাক হচ্ছে না ঢাকার। সাঙ্গাকারা আর নাসির বাদে কেউ বলার মতো রান করতে পারেননি। ৯ ম্যাচে ঢাকা অধিনায়কের রান ৩৩৯। টুর্নামেন্টে এখনো পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ। ৯ ম্যাচে নাসিরের রান ১৬৩। ঢাকার আর কোনো ব্যাটসম্যান ১০০-ও পার করতে পারেননি। টুর্নামেন্ট শেষ পর্যায়ে অথচ এখনো উদ্বোধনী জুটিটাই দাঁড়াল না ঢাকার। নাসিরের কণ্ঠেও এ নিয়ে হতাশা, ‘আমাদের ওপেনিং জুটিটা ভালোভাবে দাঁড়ায়নি। এক ম্যাচ ভালো করলে আরেক ম্যাচ খারাপ। এখনো চেষ্টা করছি জুটিটা ভালোভাবে দাঁড় করাতে।’ শেষ চারে পা রাখতে হলে কাল রাতে বরিশাল বুলসের বিপক্ষে জিততেই হবে ঢাকাকে। অবশ্য তার আগে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিলেটের ম্যাচের ফল দেখেই মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছে তারা। কে জিতল-হারল তা নিয়ে নাসির অবশ্য ভাবিত নন। তাঁর ভাবনায় কেবল জয়, ‘আগামীকাল বরিশালের সঙ্গে জিতলে শেষ চার কোয়ালিফাই করব। এতটুকুই জানি। কে জিতল, কে হারল ভাবছি না।’ এমনিতে প্রতি ম্যাচেই থাকে রাজ্যের চাপ। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ঢাকার চাপটা বেড়ে গেল আরও। শেষ ওভারটি হয়তো ঢাকাকে পোড়াচ্ছে আরও। কিন্তু বাজিটা জিততেও পারতেন ফরহাদ। প্রথম তিন বলে তো অর্ধেকটা জিতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দুটো বলেই সর্বনাশ। বাজি নেওয়ার ‘মজা’ও অবশ্য এখানেই। জিতলে হিরো, হারলে জিরো! --প্রথম আলো ৯ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে