সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯, ১১:৪৮:১২

বার্সেলোনাকে আগে গোল দিলেই বিপদ!

বার্সেলোনাকে আগে গোল দিলেই বিপদ!

নিশাত আহমেদ: ভালভার্দে এই একটা মন্ত্র ভালোভাবেই শিখিয়ে দিয়েছেন—কীভাবে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচে ফিরে আসা যায়। মৌসুম এখনো শেষ হয়নি, এর মধ্যেই সব মিলিয়ে ১১ ম্যাচে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচ বাঁচিয়েছেন মেসিরা। গত পরশুও যেমন গোল খেয়ে বার্সেলোনা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল

হারার আগে হার না মানা—কথাটিকে নতুন খোলস দিয়েছে বার্সেলোনা। পিছিয়ে পড়ে ফিরে আসাটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে ক্লাবটি! বিশ্বাস না হলে নিজেই সত্যতা যাচাই করে দেখুন। এই মৌসুমে এ পর্যন্ত মোট ১১ ম্যাচে বার্সা প্রথমে পিছিয়ে পড়ে ফিরে এসেছে বার্সাসুলভ দাপটে! প্রথমে গোল হজমের পরও ১১ ম্যাচের কোনোটায় ড্র করেছে, বাকিগুলো জিতেছে। হারেনি কোনোটাতে। মৌসুম শেষ হতে এখনো বেশ কিছু ম্যাচ বাকি। তাই ১১ ম্যাচে বার্সার এই ফিরে আসা বাড়তি মাহাত্ম্য যোগ করছে।

মৌসুমসূচক ম্যাচ সুপারকোপা থেকেই শুরু করা যাক। সেই প্রথম ম্যাচেই দর্শকদের ‘কামব্যাক’–এর স্বাদ দিয়েছিলেন মেসিরা। সেভিয়ার বিপক্ষে গত বছরের আগস্টে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ম্যাচের ৯ মিনিটে আর্জেন্টাইন উইঙ্গার পাবলো সারাবিয়ার গোলে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও বার্সা দমে যায়নি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে ও দ্বিতীয়ার্ধে উসমানে ডেম্বেলের দুই গোলে ম্যাচটা জিতেই ছাড়ে বার্সেলোনা।

লিগে বার্সেলোনার প্রথম ‘কামব্যাক’ দেখার জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। লিগের তৃতীয় ম্যাচে হুয়েসকার বিপক্ষে তিন মিনিটে পিছিয়ে পড়েছিল। ম্যাচের শুরুতে এভাবে গোল দিয়ে ঘুমন্ত বাঘকে যেন খোঁচা মেরে জাগিয়ে দিয়েছিল হুয়েসকা। পুরো ম্যাচে গুনে গুনে আটটা গোল দিয়েছিল বার্সেলোনা, ম্যাচ জিতেছিল ৮-২-এ। এরপর মোটামুটি নিয়মিত দর্শকদের একের পর এক কামব্যাক দেখিয়েছে বার্সা। পরের ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রথমে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েছিল। পরে দ্বিতীয়ার্ধে চার মিনিটের ছোটখাটো এক ঝড়ে ম্যাচ জেতে বার্সেলোনা। ৬৩ ও ৬৬ মিনিটে গোল করেন যথাক্রমে লুইস সুয়ারেজ ও ডেম্বেলে। পরের ম্যাচে জিরোনার বিপক্ষে ৫১ মিনিটে ২-১ গোলে পিছিয়ে ছিল বার্সেলোনা। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ত্রাতার ভূমিকায় আবার আবির্ভূত হন পিকে। সে ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র করে তারা। টানা তিন ম্যাচে কামব্যাক!

অ্যাথলেটিক বিলবাও ও ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষেও একই কাহিনি। প্রথমে বার্সার পিছিয়ে পড়া, শেষে ফিরে আসা। বিলবাওয়ের বিপক্ষে অস্কার ডি মার্কোসের গোলে পিছিয়ে পড়লেও ইভান রাকিতিচ ড্র এনে দেন বার্সেলোনাকে। ভ্যালেন্সিয়ার আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার এজেকিয়েল গ্যারায় প্রথমে গোল করেও দলকে জেতাতে পারেননি, মেসি পরে গোল করে ম্যাচে সমতা এনে দিয়েছিলেন। রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে পিছিয়ে থেকেও সুয়ারেজ ও ডেম্বেলের কল্যাণে জয় ছিনিয়ে আনে বার্সা।

অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষেও ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে গোল করে দলকে প্রায় নিশ্চিত হারের মুখ থেকে বাঁচান ডেম্বেলে। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে মৌসুমের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়লেও মেসি-ম্যাজিকে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা। সেভিয়ার বিপক্ষে দুই-দুইবার পিছিয়ে পড়েও ৪-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মেসিরা। সর্বশেষ গত পরশু রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে রাউল দে টমাসের গোলে পিছিয়ে পড়েও পিকে-মেসি-সুয়ারেজের তিন গোলে ম্যাচ জেতে বার্সেলোনা।

এভাবে বারবার পিছিয়ে পড়ে ফিরে আসার ব্যাপারটাকে যেভাবে ‘বাঁ হাতের খেল’ বানিয়ে ছাড়ছেন মেসিরা, এরপর থেকে কোনো দল বার্সেলোনার বিপক্ষে আগে গোল করতে দশবার ভাববে!-প্রথম আলো

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে