শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৭:১৮:০০

প্রতিপক্ষ না খেলায় চ্যাম্পিয়নকে সাসপেন্ড!

 প্রতিপক্ষ না খেলায় চ্যাম্পিয়নকে সাসপেন্ড!

স্পোর্টস ডেস্ক: অদ্ভুত কাণ্ড৷ অভিনব শাস্তিও বটে। প্রতিপক্ষ না খেললে স্বাভাবিকভাবে অপর প্রার্থী জয়ী হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটলো তার উল্টো। প্রতিযোগী তার বিপক্ষে মাঠে নামায় এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হলো বাংলার অনূর্ধ্ব ১৩ জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন নীলাশ সাহাকে৷ টুর্নামেন্ট কতৃপক্ষের এমন অদ্ভুত অচরণে রীতিমত হইছই। কারণ এই ধরণের শাস্তি কেউ আজও দেখেছেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। জাতীয় দাবা ফেডারেশন ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাসপেন্ড করেছে নীলাশকে৷ তার বিরুদ্ধে যে দাবাড়ু ওয়াকওভার দেয়, সেই আরণ্যক ঘোষকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে৷ জাতীয় ফেডারেশন ব্যাপারটি নিয়ে চূড়ান্ত ঢাকঢাক গুড়গুড় করছে৷ সরকারিভাবে শাস্তি ঘোষণা পর্যন্ত করেনি৷ শুধু শোকজের চিঠি দিয়ে জানিয়ে রেখেছে, তারা সাসপেন্ড৷ বাংলার দুই দাবাড়ু সাসপেন্ড হওয়া নিয়ে মুখ খুলেছেন জাতীয় দাবা সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট দিব্যেন্দু বড়ুয়া। এ বিষয়ে তিনি বলছেন, ‘ওদের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল৷ দিব্যেন্দু নিজে এই সংক্রান্ত ব্যাপারে ফেডারেশনের কোনও সভায় ছিলেন না৷’ তবে এই ঘটনা নিয়ে অনেক সংস্থাই কাঠগড়ায়৷ বাংলা দাবা সংস্থা, আলেখিন চেস ক্লাব৷ তাদের ভূমিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন৷ দুই দাবাড়ুই আলেখিন চেস ক্লাবের৷ বাংলার দাবায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চোরাস্রোত রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরেই৷ দুই কিশোর দাবাড়ু কি তারই শিকার? এই প্রশ্ন উঠেছে৷ গুরুগাঁওয়ের যে মিটে এই তথাকথিত গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছে, তা হয় সেপ্টেম্বরে৷ তিন মাস ধরে ব্যাপারটা নিয়ে চূড়ান্ত নাটক হয়েছে৷ শেষ রাউন্ডে ছিল দু'জনের খেলা৷ নীলাশ প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিল৷ শেষ রাউন্ডে দরকার ছিল ড্র৷ আলেখিনে তাঁর সতীর্থ আরণ্যক শরীর খারাপ থাকায় খেলতেই যায়নি৷ ডাক্তারি সার্টিফিকেট জমা দেয় চিফ আরবিট্রেটরের কাছে৷ কিন্ত্ত সেটা মানা হয়নি৷ মহারাষ্ট্রের যে ছেলেটি রানার্স হয়েছিল, সেই প্রথমে লিখিত অভিযোগ করে গড়াপেটার৷ তারপরেই ফেডারেশনের তত্পরতা শুরু হয়৷ প্রতিপক্ষ না খেললে, কেন চ্যাম্পিয়নের গায়ে সে দোষ উঠবে? এই প্রশ্নে চুপচাপ ফেডারেশন কতৃপক্ষ৷ বিশ্বের কোনও খেলাতেই এ রকম নজির নেই৷ দাবাতে অতীতে বিশ্ব জুড়ে গড়াপেটা হয়ে থাকে৷ অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে ড্র করে নেন নিজেদের মধ্যে৷ তা ইচ্ছাকৃত কিনা তা প্রমাণ করার উপায় নেই৷ কিন্তু একজন খেলতে না এলে বিপক্ষের কী দোষ, এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ ফুটবলে এ রকম আকছার হয়৷ এবং এ ক্ষেত্রে যে দল খেলতে আসে না, তাদের বেশি শাস্তি হয়৷ অন্য দলের বরং ৩-০ জয় পাওনা হয়ে যায় না খেলেই৷ দাবায় এ রকম উলট পুরাণ নিয়ে তোলপাড়৷ প্রশ্ন উঠছে, এ নিয়ে রাজ্য দাবা সংস্থা চুপ কেন? কেন নিজেদের দুই তরুণ দাবাড়ুর শাস্তি তোলার জন্য তারা সরব হচ্ছে না? রাজ্য দাবা সংস্থা সচিব অতনু লাহিড়ী বললেন, 'কিছু করার নেই৷ টেকনিক্যাল কমিটি সাত পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ ফেডারেশন ইতিহাসে এ রকম হয়নি৷ শেষ রাউন্ডে লিডার বোর্ডে প্রতিপক্ষ আসেনি৷ তাও আবার এক রাজ্যের দুই দাবাড়ু৷ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের ম্যানেজাররা একযোগে লিখিত অভিযোগ করেছে৷ ফেডারেশন গোটা ঘটনার তদন্ত করেই রিপোর্ট দিয়েছে৷ চ্যাম্পিয়ন নীলাশ লাভবান হওয়ায় শাস্তি পেয়েছে৷ তবে এপ্রিলের রাজ্য মিটে খেলতে পারবে৷ এ জন্য রাজ্য মিটও এপ্রিলের পর করছি৷' বাংলা কর্তারাই যদি এই কথা বলেন, তা হলে বাংলার খেলোয়াড়দের জন্য কে লড়বেন? ফেডারেশন ভাইস প্রেসিডেন্ট দিব্যেন্দু বড়ুয়া কী উদ্যোগ নেন, সেটাই প্রশ্ন৷ দুই কিশোর রাজ্যের দাবা রাজনীতির বলি কিনা প্রশ্ন উঠেছে৷ সূত্র : এই সময় ১৯ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে