সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:৩৯:৪৯

গোয়াকে হারিয়ে আইএসএল চ্যাম্পিয়ান চেন্নাই

গোয়াকে হারিয়ে আইএসএল চ্যাম্পিয়ান চেন্নাই

মুনাল চট্টোপাধ্যায়: গোয়ার স্বপ্নভঙ্গ, সেখানে কথা রাখলো চেন্নাইন। বন‍্যা–বিধ্বস্ত মানুষের জন্য ট্রফি জেতার প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নেমেছিল। এক রোমহর্ষক ফাইনাল শেষে ৩–২ গোলে জিতে আই এস এলের নতুন চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইন এফ সি। উৎসবে মেতে–থাকা মারগাঁওয়ের মাঠভর্তি গোয়া–সমর্থকের সামনে চেন্নাইন ফুটবলারদের নার্ভ ধরে রাখার কাজটা সহজ ছিল না। তবু শুরু থেকেই চড়া মেজাজের ফাইনালে এফ সি গোয়ার ফুটবলারদের সঙ্গে টক্কর দিয়েছেন মেন্ডোজা, পেলিসারি, জেজেরা। পুনের মাঠে অ্যাটলেটিকোর বিরুদ্ধে প্রথম সেমিফাইনালে এলানো ছিলেন না। তার জায়গায় পেলিসারি চেন্নাইনের ৩–০ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। কলকাতায় ফিরতি সেমিফাইনালে পেলিসারিকে বসিয়ে এলানোকে শুরু থেকে খেলিয়ে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ান কোচ মাতেরাজ্জি। তবে এদিন গোয়া ডিফেন্সে লুসিও, গ্রেগরির ওপর চাপ বাড়াতে এলানোকে বসিয়ে পেলিসারিকেই রাখেন। ১৫ মিনিটে পেলিসারির শট পোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়। একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে ২০ মিনিটে গোল ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে এসে মেন্ডোজাকে বক্সের মাথায় গোলকিপার কাট্টিমনি ট্যাকল করে পরিস্থিতি সামাল দেন। ৪০ মিনিটে মেন্ডোজার গড়ানো শট রুখে অবধারিত পতন রোধ করেন এই কাট্টিমনিই। দু’দলের দুরন্ত ট্যাকটিকাল লড়াইয়ে জিকোর দল গোলের সুযোগ পায়নি এমন নয়, তবে তুলনামূলকভাবে কম। কারণ গোয়া কোচের পরিকল্পনা শুরুতেই ধাক্কা খায়, ৭ মিনিটের মাথায় মেলসনের সঙ্গে হেডে উঠে শূন্যে সঙ্ঘর্ষে ডুডু চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায়। ডুডুর জায়গায় জোনাথন লুকা মাঠে এলে তার সময় লেগেছে রাফায়েল, লিও মৌরা, জোফ্রে, রোমিও সঙ্গে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে। তা ছাড়া অ্যাটলেটিকোর বিরুদ্ধে যুবভারতীতে যতটা নার্ভাস লেগেছিল মেন্ডি, মেলসনদের, এদিন কিন্তু সেই নড়বড়ে ভাবটা ছিল না। এদিনও গোলের নিচে বিশ্বস্ত প্রহরীর ভূমিকায় ছিলেন বেতে। তবে তার মাঝেও গোল করার দুটো সুযোগ এসে গিয়েছিল গোয়ার সামনে। ৩৩ মিনিটে লিও মৌরার শট মেহরাজের পা ছুঁয়ে বেরিয়ে গেলে স্বস্তি পায় চেন্নাইন শিবির। লুকার কর্নারে ভেসে আসা বলে রাফায়েলের হেড গোলে ঢোকার মুখে লাইনে রোখেন থৌই। ৩৭ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে নেওয়া মৌরার ফ্রিকিক চেন্নাইনের এক ফুটবলারের পায়ে লেগে পোস্টের কোণ ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। তবে আসল নাটক অপেক্ষা করে ছিল দ্বিতীয়ার্ধে। ৫৩ মিনিটে অনর্থক বক্সের মধ্যে মেন্ডোজাকে ল্যাং মেরে ফেলেন গোয়ার প্রণয়। রেফারি পেনাল্টি দিতে দ্বিধা করেননি। পেলিসারির নেওয়া পেনাল্টি গোলকিপার কাট্টিমনি আটকে দিলেও ফিরতি বল জালে জড়িয়ে চেন্নাইনকে এগিয়ে দেন পেলিসারিই। কিন্তু মাতেরাজ্জির দলের উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। চার মিনিটের মধ্যে রোমিওর পাস থেকে গোল করে সমতা ফেরান লিও মৌরার বদলি হিসেবে নামা হাওকিপ। দু’মিনিট না যেতেই ২–১ করার সুযোগ এসে গিয়েছিল চেন্নাইনের সামনে। বক্সের মধে‍্য এবার ফাউল করেন গোয়া গোলকিপার কাট্টিমনি। আবার পেনাল্টি। তবে এবার মেন্ডোজার নেওয়া পেনাল্টি বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে অনবদ্যভাবে বাঁচান কাট্টিমনি। চেন্নাইন কোচ মাতেরাজ্জি আক্রমণে বৈচিত্র্য আনতে পেলিসারির জায়গায় নামান এলানোকে। বরং উল্টে গোয়াই ৮৭ মিনিটে জোফ্রের দর্শনীয় ফ্রিকিকে ২–১ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখনও পিকচার বাকি ছিল দোস্ত। ৯০ মিনিটে নিজেদের মাঝমাঠ থেকে গোয়া বক্সে লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন মেহরাজ। নিজের ডিফেন্ডারের সঙ্গে ধাক্কায় হাতের টোকায় সেই বল নিজের গোলেই পাঠালেন গোলকিপার কাট্টিমনি। এখানেই শেষ নয়। এক মিনিট বাদেই জয়েস রানের পাস থেকে নিজের ১৩ নম্বর গোল করে মেন্ডোজা চেন্নাইনের হয়ে ট্রফি জিতে গোয়ার বড়দিনের উৎসবে চোনা ফেলে দিলেন। ২১ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে