সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১:৩৮

বাংলাদেশকে খেলতে হবে জেতার জন্যই, ফলাফল পরের বিষয় : দীপ দাশগুপ্ত

বাংলাদেশকে খেলতে হবে জেতার জন্যই, ফলাফল পরের বিষয় : দীপ দাশগুপ্ত

দীপ দাশগুপ্ত : বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে যদি বলতে হয়, আমি খুব হতাশ। গত দুই-তিন বছর ধরে বাংলাদেশ দলকে খুব ভালোভাবে অনুসরণ করছি। আমরা যেটা মনে হয় প্রতিভার কোথাও ঘাটতি নেই। এই দলে অনেক প্রতিভার ছড়াছড়ি। 

খারাপ লাগে যে আমরা লড়তে পারি, জিততে পারি—বিশ্বাসে ঘাটতি রয়ে গেছে। লিটন (দাস), সৌম্য (সরকার), টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত খেলল যে ছেলেটা নাঈম (শেখ)—প্রতিভা আছে। ওই বিশ্বাসটা কখনো কখনো মেহেদীর (মিরাজ) মধ্যে দেখি। মুশফিকের মধ্যে তো দেখিই। ওর মনোভাব খেলে যাব, লড়ে যাব। 

বাকিদের মধ্যে লড়াই করার ব্যাপারটা কখনো মনে হয় অনেক ঘাটতি আছে। এ কারণে মুশফিককে আমার খুব ভালো লাগে। ওর মধ্যে লড়ে যাওয়ার ব্যাপারটা আছে। আমার মনে হয় মুশফিক চার, লিটন পাঁচ, মিঠুন আরেকটু পেছনে খেলতে পারে। মিঠুন মেরেও খেলতে পারে। দ্বিতীয় নতুন বল না হয় মিঠুন খেলুক।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা স্পিন খুব ভালো খেলে। পুরো সিরিজে মনে হয়েছে মুশফিক আর লিটন সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেছে ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে। যদি তাই হয়, চার-পাঁচে এ দুজন খেলতে পারে। মাহমুদউল্লাহ আরেকটু পেছনে আসতে পারে।

প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের চার বোলার নিয়ে খেলার অর্থটা বুঝতে পারিনি। বাংলাদেশের কৌশল আমার একটু এলোমেলো লেগেছে। প্রথম ইনিংসে মেহেদীকে নিয়ে এল ৩৬ ওভার পরে—এটার সঙ্গে একমত নই। কাল লিটন-মুশফিক যখন ভালো খেলছিল, তখন ভারতীয় বোলাররা কী করল? 

তারা ঠিক করল, উইকেট নেব না, ডট বল করব। লিটন যখন আউট হয়েছে তার আগে ৫-৬ ওভারে ৫-৬ রানের মতো হয়েছে। যখন রান হচ্ছিল না তখন লিটন ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে খেলতে গিয়ে আউট হয়েছে। এখানে দুটো উপায় আছে: প্রথমত, উইকেট নেব। আর উইকেট না পেলে রান দেব না। 

তাইজুল-মেহেদী ওভারে প্রায় চার বা চারের ওপরে রান দিয়েছে। এখানে বুঝতে হবে, হ্যাঁ, সব সময় উইকেট পাব না। উইকেট পাওয়া কঠিন হলে রান দেব না। ব্যাটসম্যান যদি ঝুঁকি নিয়ে মারে, মারুক। ঝুঁকি নিলে আউট হতেও পারে। আপনার হাতে যদি অপশন না থাকে কী করা যাবে? যা আছে তাই দিয়ে ব্যাটসম্যানদের আউট তো করতে হবে। 

এখানে বাংলাদেশ কেন এসেছে? জিততে? জিততে হলে তো ২০টা উইকেট নিতে হবে। সেই ২০ উইকেট নিতে হলে আপনাকে সেভাবে বোলার নিতে হবে। আর যদি কোচের (রাসেল ডমিঙ্গো) বক্তব্য হয় যে আমার হাতে ৪৫-৫০ গড়ের ব্যাটসম্যান নেই, এ কারণে অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান নিয়েছি, সেটি দলে কী বার্তা দিচ্ছে? বার্তাটা তো নেতিবাচক। খেলোয়াড়েরা ভাবছে, আমাদের ওপর কোচের কোনো ভরসা নেই!

বাংলাদেশের লক্ষ্য হওয়া উচিত,১-১ করে দেশে ফেরা। ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে আমরা দেখতে চাইব লড়াই হোক। যেই জিতুক, লড়াইটা যেন হয়। একপেশে টেস্ট যেন হয়। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য এটা খুব দরকার। গোলাপি বল কিংবা দিবারাত্রির হোক, জমজমাট একটা টেস্ট চাই। 

আমরা কেন অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের টেস্ট দেখি, ম্যাচ খুব জমজমাট হয়, খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। ভারতকে ভারতে হারানো খুব কঠিন। তার মানে তো এই নয় যে খেলার আগে মনে করব পারব না! খেলতে হবে জেতার জন্যই। জিতি না জিতি সেটা পরের বিষয়।

লেখক : ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান ধারাভাষ্যকার।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে