শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১০:৪৭:০৮

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ডানা ছেঁটে দিচ্ছে সরকার?

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ডানা ছেঁটে দিচ্ছে সরকার?

স্পোর্টস ডেস্ক : শশাঙ্ক মনোহরের হাত ধরে বিসিসিআইয়ে বদল আনার কথা ভাবছে ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ছবি: সংগৃহীত।বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেট বোর্ড তারা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) হম্বিতম্বিতে কাঁচুমাচু হয়ে থাকতে হয় পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। কিন্তু বাঘের ঘরেই তো ঘোগের বাসা। বিসিসিআইকে দেওয়া অবাধ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। অন্য সব বোর্ডের মতো ২০১৩ সালের প্রস্তাবিত জাতীয় ক্রীড়া উন্নয়ন বিলের আওতায় আসতে হচ্ছে বিসিসিআইকেও। ভারতের ক্রীড়া অঙ্গনে বিসিসিআইকে দেওয়া হয়েছিল প্রবল ক্ষমতা। একমাত্র এই বোর্ড ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনা ছাড়া অবাধে নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে পারত। কিন্তু একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে বোর্ড কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ২০১৩ আইপিএলের ফিক্সিং বিতর্ক এখনো থামেনি। এর মধ্যে যোগ হয়েছে দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ও এর সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার কীর্তি আজাদের মামলা। এই দুই দুর্নীতির অভিযোগে ভারতের ক্রিকেটে এখন তোলপাড় চলছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে জবাবদিহির অভাব, স্বেচ্ছাচারিতার কথাও উঠছে। বিসিসিআইকে তাই আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে উদ্যোগ নিচ্ছে ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ভারত সরকারের খেলাধুলার নীতিমালার (স্পোর্টস কোড) অনেক কিছুরই এড়িয়ে যাচ্ছে বিসিসিআই। এটি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এই বিষয়ে বিসিসিআইয়ের অবস্থান জানতে বোর্ড সচিব অনুরাগ ঠাকুরকে এক সভায় ডেকেছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এই সভায় স্পোর্টস কোডের মূলত দুটি বিষয়ে অনুরাগের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে শোনা যাচ্ছে—তথ্য অধিকার আইন ও বিসিসিআইয়ে পদস্থ কর্মকর্তাদের বয়স ও মেয়াদের নিয়মকানুন। এ ছাড়া আইসিসির সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) সম্ভাব্য ‘সমঝোতা স্মারক’ বিষয়েও বিসিসিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে মন্ত্রণালয়। বিসিসিআইকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বড় ভরসা বিসিসিআই সভাপতি শশাঙ্ক মনোহরের আগ্রহ। নির্বাচিত হয়ে আসার পর থেকেই বিসিসিআইতে সংশোধনের কথা বলে আসছেন মনোহর। মন্ত্রণালয় মনে করছে, স্পোর্টস কোডের এই সংশোধনী মেনে নিতে মনোহর বিসিসিআইয়ের অন্য কর্মকর্তাদের রাজি করাতে পারবেন। এ ছাড়া ক্রিকেট রাজনীতির কুপ্রভাব থেকে বিসিসিআইকে মুক্ত করতেও সংস্থাটির ওপর আরও কড়াকড়ি আরোপ করতে চাইছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। বিসিসিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করবে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলছেন, বিসিসিআই সব সময়ই আন্তর্জাতিক সূচিগুলো বাস্তবায়নের জন্য শেষ মুহূর্তে এসে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করে। যে কারণে অল্প সময়ের মধ্যে সব দিক বিবেচনা করে ওই সিরিজ বা টুর্নামেন্টগুলোর জন্য অনুমতি দেওয়া মন্ত্রণালয়ের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। অন্য খেলার নিয়ন্ত্রক বোর্ডগুলো যেমন তিন মাস আগেই ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করে, বিসিসিআইকেও এখন থেকে তিন মাস আগে অনুমতি চাইতে হবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বলছেন, ‘যেহেতু এক বছর আগেই সূচি চূড়ান্ত হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে কেন অনুমতি চাইবে বিসিসিআই? এত দিন ধরে বিসিসিআইয়ের প্রতি আমরা বেশ নরম ছিলাম, তবে এখন অবস্থার পরিবর্তন হবে।-প্রথম আলো ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে