শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ০৯:০২:২৫

ছোটবেলার কোচ আল মাহমুদের যে আবদার পূরণ করলেন মিরাজ

ছোটবেলার কোচ আল মাহমুদের যে আবদার পূরণ করলেন মিরাজ

স্পোর্টস ডেস্ক : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ম্যাচের দ্বিতীয় দিন আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। এত পরে নেমেও সেঞ্চুরি করতে পারবেন, সেই বিশ্বাস ছিল না খোদ মিরাজেরই।

বাংলাদেশ ইনিংসের ৯৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটে গিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজ আউট হন ১৫১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে। মাঝের ৫৮ ওভারে দল পেয়েছে ১৮২ রান, যেখানে মিরাজের একার অবদান ১০৩। প্রায় পৌনে ৪ ঘণ্টা উইকেটে থেকে ১৬৮ বল মোকাবিলা করে ১০৩ রানের ইনিংসটি খেলেছেন মিরাজ। যেখানে ছিল ১৩টি চারের মার।

উইকেটে গিয়ে মিরাজ সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসানকে। সপ্তম উইকেট জুটিতে সাকিব-মিরাজ যোগ করেন ৬৭ রান। দলীয় ৩১৫ রানে সাকিব ফিরে যান ব্যক্তিগত ৬৮ রান করে। তখন মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৩৮ রানে। এরপর শেষের তিন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে দলীয় সংগ্রহে আরও ১১৫ রান এনে দেন।

তাইজুল ইসলামকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৪৪, নাঈম হাসানের সঙ্গে নবম উইকেটে ৫৭ এবং শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে মোস্তাফিজের সঙ্গে গড়েন ১৪ রানের জুটি। বাংলাদেশের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আট বা তার নিচে নেমে করেছেন সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ২২তম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হয়েছেন মিরাজ।

দিনের শুরুর দিকে ব্যাটিংয়ে নামার সময় এত অর্জনের কথা চিন্তাও করেননি তিনি। আটে নেমে সেঞ্চুরি করা সম্ভব, এ বিশ্বাসই ছিল না তার। তবে মিরাজের ছোটবেলার কোচ আল মাহমুদ ম্যাচ শুরুর আগেই আবদার করেছিলেন সেঞ্চুরির। সেটি করতে পেরে সন্তুষ্টি ২৩ বছর বয়সী মিরাজের কণ্ঠে।

দিনের খেলা শেষে মিরাজ বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে নামার সময় এমন কিছু মাথায় ছিল না। তবে সবসময় চিন্তা করছিলাম.... খেলা শুরুর আগে, আমার প্রথম যে কোচ আল মাহমুদ, খুলনা থেকে আমাকে ফোন করেছিলেন যে, এই ম্যাচে একটা সেঞ্চুরি দেখতে চাই। কিন্তু আমার নিজের বিশ্বাস হচ্ছিল না যে এটা কী করে সম্ভব। আট নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করা কীভাবে সম্ভব!’

তিনি আরও বলেন, ‘সে (আল মাহমুদ) আমাকে সবসময় উৎসাহ দিচ্ছিলেন, বলছিলেন- তুই যদি ভালোভাবে খেলতে পারিস, ভালো সুযোগ আছে, সেঞ্চুরি হতে পারে। সাহস দিচ্ছিলেন। তবে এটা বলতে চাই যে, আমার নিজের ভেতরে বিশ্বাস হচ্ছিল না। এখন তো আল্লাহ অশেষ রহমতে নিজেকেও বিশ্বাস করছি যে, শেষের দিকে যদি ব্যাটসম্যান ভালো খেলে বা বোলার সাপোর্ট করে; তাহলে ভালো রান করা, সেঞ্চুরি করা সম্ভব।’

বয়সভিত্তিক ক্যারিয়ারে ২০১৩ সালে নিজের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছিলেন মিরাজ। এরপর মাঝের আট বছর আর কোনো স্বীকৃত ক্রিকেটে তিন অঙ্কের দেখা পাননি তিনি। আজ আবার পেলেন সেঞ্চুরি। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করেন মিরাজ।

টাইগার অলরাউন্ডারের ভাষ্য, ‘আলহামদুলিল্লাহ্। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। খুব ভালো লাগছে যে, আসলে এরকম একটা সেঞ্চুরি... খুব ভালো লাগছে এবং আসলে অবিশ্বাস্য। আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে।’

এমন সেঞ্চুরি ক্যারিয়ারে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? জানতে চাওয়া হলে মিরাজের উত্তর, ‘একটা জিনিস দেখেন, আমি যখন শুরু করেছি, তখন আমি হয়তো ভালো ব্যাটিং করতে পারছিলাম না। কিন্তু আমি ধীরে ধীরে চেষ্টা করেছি নিজের যতটুকু উন্নতি করা যায়। আমি মনে করি, গত কয়েক দিনে যা কাজ করেছি, তা অনেক ভালো হয়েছে। তার জন্য হয়তো আজকের ব্যাটিংটা ভালো হয়েছে, আল্লাহর রহমতে রান করতে পেরেছি।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে