স্পোর্টস ডেস্ক: একে একে ৪ উইকেট, তাসকিনের কাছে নাস্তানাবোধ নিউজিল্যান্ড! নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে জ্বলে উঠেছেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। তার সঙ্গে তরুণ শরিফুল ইসলামও যোগ দেয়ায় শতরান পেরোনোর আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কিউইদের সংগ্রহ ১২ ওভার ২ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান। গ্লেন ফ্লিপ (৩০) এবং মার্ক চ্যাপম্যান (২) রান নিয়ে ক্রিজে আছেন। বৃষ্টির কারণে খেলা আপাতত বন্ধ রয়েছে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকে মারমুখী খেলতে থাকেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যালেন। নাসুম আহমেদের করা প্রথম ওভারে দুই চারের মারে নিয়ে নেন ৯ রান, সাইফউদ্দিনের করা পরের ওভারে আসে আরও ৭ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম বলে বাউন্ডারি হজম করেও ৪ রানের বেশি দেননি নাসুম।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিং পরিবর্তন করেন মাহমুদউল্লাহ। সাইফউদ্দিনের জায়গায় আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। তার প্রথম বলেই ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কা মারেন অ্যালেন। ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেননি তাসকিন। সুযোগ তৈরি করেন পরের বলেই। অতি আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টায় মিড অফ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন অ্যালেন। বলের নিচে গিয়েও সেটি তালুবন্দী করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ।
সেই ওভারের চতুর্থ বলে লংঅন দিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ছক্কা মারেন গাপটিল। তবু দমে যাননি তাসকিন, আপোস করেননি গতি ও বাউন্সের সঙ্গে। এর ফলও পান হাতেনাতে। তার ওভারের শেষ বলটিতেও ছক্কার জন্য বড় শট নেন অ্যালেন। কিন্তু টাইমিংয়ের গড়বড়ে সেটি উঠে যায় আকাশে। স্কয়ার লেগ থেকে অধিনায়কের করা ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেননি নাঈম শেখ। ১০ বলে ১৭ রান করে বিদায় নেন অ্যালেন।
পরের ওভারে নাসুমকেও আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ, বল তুলে দেন আরেক তরুণ শরিফুল ইসলামের হাতে। দারুণ গতি ও বাউন্সের সঙ্গে দুর্দান্ত এক ওভার করেন শরিফুল। তবে কোনো বাউন্ডারি না পেলেও সেই ওভার থেকে ৭ রান তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড।
নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেলেও তাসকিনকে টানা দুই ওভার করাননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। ষষ্ঠ ওভারে ফের আক্রমণে আনেন সাইফউদ্দিনকে। প্রথম পাঁচ বলে জোড়া চার হজম করে ১২ রান দিয়ে বসেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু শেষ বলে তাসকিনের দুর্দান্ত ক্যাচে ওভারটি শেষ হয় ভালোভাবে। সাইফউদ্দিনের পায়ের ওপর করা ডেলিভারিটি জোরের সঙ্গে খেলেছিলেন গাপটিল। ব্যাটের ভেতরের দিকে লেগে বল চলে যায় ফাইন লেগে। সেখান থেকে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতেই বলটি তালুবন্দী করেন তাসকিন, ১৮ বলে ২১ রান করে গাপটিলকে ফিরতে হয় সাজ ঘরে।
প্রথম পাওয়ার প্লে'তে দুই উইকেট নেয়া বাংলাদেশ, স্বাগতিকদের ওপর আরও চাপ বাড়ায় ঠিক পরের বলেই। শরিফুলের করা ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে অনসাইডে বড় শটের চেষ্টা করেন আগের ম্যাচের নায়ক ডেভন কনওয়ে। কিন্তু টপ এজ হয়ে বল চলে যায় সোজা স্কয়ার লেগে থাকা মিঠুনের হাতে। যার সুবাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উইকেট পেয়ে যান শরিফুল। আগের ম্যাচে ৯৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলা কনওয়ে এবার ১৫ রানের বেশি করতে পারেননি।
দ্রুতই তিন টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়েছিল কিউইরা। এরপর উইল ইয়াং এবং গ্লেন ফিলিপসের ব্যাটে ভর করে লড়ছিল কিউইরা। রান রেট ঠিক রেখে এগোচ্ছিল তারা। এরপর ১২তম ওভারের ৪র্থ বলে মেহেদি হাসানকে উড়িয়ে মারতে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে ব্যর্থ হন ইয়াং। এই সুযোগেই তাকে স্ট্যাম্পিং করেন লিটন দাস। দলীয় ৯৪ রানে ব্যক্তিগত ১৭ বলে ১৪ রানে ফেরেন ইয়াং।