স্পোর্টস ডেস্ক : কি দেখালো মাশরাফির দল, এমন কথা ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের দৃশ্য দেখেছেন দর্শক-শ্রোতারা। প্রতিপক্ষকে ১৬৩ রানে বেঁধে ফেলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মাশরাফির দল। শেষে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারিয়ে চার ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের করা ১৬৩ রানের জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ইনিংসের ৮ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
শুক্রবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে সাব্বির রহমান ও মুশফিকুর রহিমের পর সাকিব আল হাসানের দৃঢ়তায় ৮ বল বাকি থাকতেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগার শিবির।
বাংলাদেশকে জেতাতে সাকিব ১৩ বলে ২০ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। সাকিবের সঙ্গী অভিষিক্ত নুরুল হাসান সোহান ৫ বলে ৭ রান করে অপরাজিত করেন। সাব্বির ৩৬ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৪৬ ও মুশফিক ১৯ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২৬ রান করেন।
ওপেনার তামিম করেন ১৯ বলে ২৪ রান। জিম্বাবুয়ের হয়ে গ্র্রায়েম ক্রেমার দুটি এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, লুক জঙ্গওয়ে ও সিন উইলিয়ামস নেন একটি করে উইকেট।
জয়ের ১৬৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ ছিল দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য সরকারের। দুজন ২১ বলে ৩১ রান তুললে জয়ের ভিত মজবুত হয় টাইগার শিবিরে। দলীয় ৩১ রানের মাথায় সৌম্য (৭) ফিরে গেলে দ্বিতীয় উইকেটে তামিমকে নিয়ে ২৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে রাখেন সাব্বির।
দ্রুত তামিম ও শুভাগত হোমকে হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ৭৪ রানের মাথায় তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে শুভাগত ফিরে গেলে চতুর্থ উইকেটে মুশফিক ও সাব্বির মিলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথ দেখায়।
এরপর ম্যাচে নাটকীয়তা ফিরে আসে। ১১৮ থেকে ১৩৭- এই ১৯ রানের ব্যবধানে সাব্বির, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ ফিরে গেলে ম্যাচে রোমাঞ্চ ও উত্তেজনা ফিরে আসে। একপ্রান্ত আগলে রাখা সাকিব অভিষিক্ত নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে ১১ বলে ২৯ রানের দারুণ জুটি গড়ে বাংলাদেশকে রোমাঞ্চকর জয় এনে দেয়।
এর আগে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ভুসি সিবান্দার দারুণ ব্যাটিংয়ের সুবাদে ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। সফরকারীদের হয়ে মাসাকাদজা ৫৩ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে করেন ৭৯ রান। সিবান্দা করেন ৩৯ বলে ৪৬ রান।
মুস্তাফিজ ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট লাভ করেন। আল আমিন ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন সমান ২ উইকেট। মাশরাফি ও সাকিব বোলিংয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ হন। মাশরাফি ৪ ওভারের স্পেলে ৩৭ রান দিয়ে উইকেট-শূন্য থাকেন। সাকিব ৪৫ রান দিয়ে এক উইকেট নেন।
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার মাসাকাদজা ও সিবান্দা ১২ ওভারে ১০১ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে বাংলাদেশ শিবিরকে ভয় দেখিয়েছিলেন। দলীয় ১০১ রানের মাথায় সিবান্দাকে আউট করে সাকিব অতিথি দলের ইনিংসের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করেন। তবে অপর প্রান্তে থাকা মাসাকাদজা একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাংলাদেশের বিপদ বাড়াতে থাকেন। অবশ্য শেষ দিকে জ্বলে উঠেন দুই টাইগার পেসার মুস্তাফিজ ও আল আমিন।
এ দুজনের দৃঢ়তায় শেষ ৩২ বলে মাত্র ৩৬ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা। ফলে স্বস্তি ফিরে টাইগার শিবিরে। প্রতিপক্ষকে ১৬৩ রানে বেঁধে ফেলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মাশরাফির দল। দারুণ এক ম্যাচজয়ী ইনিংস উপহার দেন তিনি।
এ জয়ে বাংলাদেশ চার ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চার ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামী রোববার একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচ আগামী বুধ ও শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে।
১৫ জানুয়ারি,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম