স্পোর্টস ডেস্ক : সাফের পর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ব্যর্থ বাংলাদেশ ফুটবল দল। ব্যর্থ ফুটবলাররাই দলবদলের বাজারে বড় তারকা। গতরাতে টিম হোটেলে ঘটে যাওয়া ঘটনাই যার প্রমান। বহরাইনের কাছে ০-১ গোলে হেরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর খেলোয়াড়রা টিম হেটেলে ফেরেন।
সোমবার রাত সোয়া আটটার দিকে একদল ফুটবল সংগঠক চড়াও হন হোটেল পূর্বানীতে। যেখানে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের আবাসস্থল। উদ্দেশ্য জাতীয় দলে থাকা নিজ ক্লাবের খেলোয়াড়দের তুলে নিয়ে যাওয়া। রাত তখন সোমবার রাত সোয়া আটটা।
তখনও বাহরাইনের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে হার নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শেষ হয়নি। এর মধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের টিম হোটেলে এক তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। এ নিয়ে রাত সোয়া আটটা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন ক্লাবের সংগঠকদের আনাগুনা।
খবর অনুযায়ী, সেখানে হাজির শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের পরিচালক খোকন। তিনি মামুনুল ইসলামের কক্ষে গিয়ে তার সঙ্গে ক্লাবে যেতে বলেন। তাতে এ মিডফিল্ডার অস্বীকৃতি জানালে ভয় দেখান প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের উক্ত পরিচালক। একপর্যায়ে মামুনুল ইসলাম বিষয়টি হোটেলের নিচেই অবস্থান করা জাতীয় দলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেনকে জানান। টিম লিডার আজমল আহমেদ তপনকে সঙ্গে নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে মামুনুলের কক্ষে যান।
শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেন ও টিম লিডার আজমল হোসেন তপন ঘটনাস্থলে এসে এই তুলকালাম কাণ্ডের নিরসন করেন।
বিষয়টি স্বীকার করেন জাতীয় দলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেন। ঘটনার পর উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনাল শেষে খেলেয়াড়রা যখন হোটেলে নিজ কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহুর্তে খোকন নামের শেখ জামালের এক পরিচালক অধিনায়ক মামুনুলের কক্ষে প্রবেশ করে তাকে রুম থেকে নিয়ে যেতে চান।
তিনি আরো বলেন, মামুনুল ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বললে, ওই কর্মকর্তা বলেন- হু ইজ ম্যানেজার? পরে মামুনুল আমাকে ফোন দিলে আমি দৌঁড়ে উপরে চলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি স্বসস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে খেলোয়াড়দের হুমকি দিচ্ছেন শেখ ইকবাল খোকন নামে শেখ জামালের ওই কর্মকর্তা। আমি তাকে তাৎক্ষণিক নীচে নামতে বললে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দিয়ে হুমকি দেন। আমি পুলিশে খবর দিলে আগন্তুকরা তা টের পেয়ে হোটেল ত্যাগ করে।’
কার অনুমোতি নিয়ে খেলোয়াড়দের নেয়ার জন্য এসেছেন? জানতে চাইলে টিম লিডার ও ম্যানেজারের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন শেখ জামাল ক্লাবের উক্ত পরিচালক। তিনি দাবী করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অনুমোতি নিয়েই হোটেলে এসেছি। ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেন এ বিষয়ে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে কথা বললে সাবেক এ তারকা বলেন, আমি কাউকে খেলোয়াড় নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমোতি দেইনি।
এই ঘটনা জানতে পেরে ঢাকা আবাহনী, চট্টগ্রাম আবাহনী ও শেখ রাসেলের কর্মকর্তারাও হোটেলে চলে আসেন। তাদেরও লক্ষ্য ছিল জাতীয় দলে থাকা নিজেদের খেলোয়াড় নিয়ে যাওয়া। পরে তারা ম্যানেজারের অনুরোধে ফিরে যান।
প্রসঙ্গত, ফুটবলারদের আসন্ন দলবদলকে ঘিরে মুখোমুখী অবস্থানে একাধিক ক্লাব। কাগজ-কলমে খেলোয়াড় বিন্ধন প্রক্রিয়া শুরু না হলেও বিভিন্ন ক্লাব কর্মকর্তারা খেলোয়াড়দের নিজেদের বলে দাবী করে আসছে। তার প্রেক্ষিতেই কাল খেলোয়াড়দের তুলে নিতে টিম হোটেলে হাজির হন শেখ জামাল ক্লাব কর্মকর্তারা।
১৮ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম