স্পোর্টস ডেস্ক: ঘড়িতে তখন বাজে ভোর সাড়ে তিনটা। দিল্লির টেগোর গার্ডেনের পুলিশ কোয়ার্টারের একটি ঘরের ফোন বেজে উঠল। ফোন ওঠাতেই একটা গম্ভীর গলার আওয়াজ শুনতে পাওয়া গেল। "ক্ষমা করে দাও, সোনা জিততে পারলাম না"।
এই গলার স্বরটা অন্য কারোর নয়, বরং ভারতের ২৩ বছর বয়সি তুলিকা মানের। বার্মিংহামে আয়োজিত কমনওয়েলথ গেমসে জুডো প্রতিযোগিতায় তিনি রুপোর পদক জয়ের পর তিনি মা'কে ফোন করেছিলেন। ফোন করতে করতেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন ক্রীড়াবিদ তুলিকা।
এই চোখের জল অবশ্যই জয়ের, এই চোখের জলেই লুকিয়ে রয়েছে বহু লড়াইয়ের গল্প কিন্তু এত সংঘর্ষের পরেও সোনার পদক জিততে না পারার জন্য তিনি নিজের মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন। হতে পারে তুলিকার পদকের রং সোনালি হয়নি। কিন্তু, তিনি যে সাফল্য অর্জন করেছেন, সেটাও সোনার থেকে কোনও অংশে কম নয়।
দিল্লি পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর পদে রয়েছেন তুলিকার মা অমৃতা। ছোটোবেলা থেকে তুলিকা মায়ের কাছেই বড় হয়ে উঠেছেন। তুলিকার রুপো জয়ের পর তার মা বললেন, "আমি জানি যে সোনার পদক জিততে না পারার জন্য ও যারপরনাই হতাশ হয়ে পড়েছে। কিন্তু রুপোর পদক জয়ও কম বড় সাফল্য নয়।"
কমনওয়েথে জুডো প্রতিযোগিতায় তুলিকা ৭৮ কিলোগ্রাম ওজন বিভাগে স্কটল্যান্ডের সারা এডলিংটনের বিরুদ্ধে হেরে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। তিনি আরও যোগ করেন বধূ নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পেতে ২০১১ সালেই নজফগড়ে অবস্থিত শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছিলেন অমৃতা। এই সিদ্ধান্ত তুলিকার মায়ের পক্ষে একেবারেই সহজ ছিল না।
পুলিশের চাকরি করতে করতেই মেয়েকে বড় করে তোলা অমৃতার কাছে যথেষ্ট কঠিন একটা কাজ ছিল। তুলিকার মা বললেন, "আমি প্রাথমিকভাবে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কারোর সঙ্গে আলোচনা করিনি। কিন্তু তুলিকা যখন ব্যাপারগুলো বুঝতে শিখল, তখন আমি বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছিলাম।"