শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৫:৩৭:৫৮

রানার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে স্মৃতিকাতর হোয়াটমোর

রানার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে স্মৃতিকাতর হোয়াটমোর

জ্যোতির্ময় মণ্ডল : ‘আমি যতবার খুলনায় আসব, আপনার বাসায় অবশ্যই ঢুঁ মারব’, মানজারুল ইসলাম রানার মা জামিলা খাতুনকে বললেন জিম্বাবুয়ে দলের কোচ ডেভ হোয়াটমোর। ইংলিশে বলা এরপরের কথা আর বুঝতে পারেননি জামিলা খাতুন।

কয়েকদিন ধরে তিনি অপেক্ষায় ছিলেন কেউ না এলেও হোয়াটমোর ও মাশরাফি মুর্তজা অবশ্যই তার বাড়িতে পা রাখবেন। দু’জনই যে রানার অনেক কাছের। মাশরাফির অন্তরের বন্ধু ছিলেন রানা। হোয়াটমোর প্রচণ্ড ভালোবাসতেন শিষ্য রানাকে। দূর আকাশের তারা হয়ে যাওয়া রানা হয়তো উপরে বসেই গুরুর ভালোবাসা দেখছেন। মাশরাফি এখনও যাওয়ার সুযোগ পাননি। তিনিও হয়তো যাবেন সন্তানহারা মায়েকে সান্ত্বনা দিতে।

কাল অনুশীলন ছিল না। আগেরদিন জিম্বাবুয়ে তৃতীয় ম্যাচে জয় পেয়েছে। ফাঁকা সময় কাজে লাগাতে তাই রানার বাড়িতে যেতে ভোলেননি হোয়াটমোর। যেন বললেন, ‘রানা, বাড়ি আছো’? রানা নেই প্রায় ৯ বছর হতে চলল। হোয়াটমোরের মানসপটে আজও রানার স্মৃতি অক্ষয়। কাল দুপুরের দিকে খুলনার মুজগুন্নির রানার বাসায় গিয়ে তার কবর দেখতে যান বাংলাদেশ দলের সাবেক কোচ। সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এরপর রানার ঘরে এসে তার ব্যবহৃত জিনিসগুলো দেখেন। স্মৃতিকাতর হোয়াটমোর তাকিয়ে থাকেন রানার ছবির দিকে। তার জার্সি হাতে তুলে নেন। রানার খাটে বসে তার ছবি দেখে হয়তো ফিরে যান অতীতে।

মানজারুল ইসলামের বিয়োগান্তক ঘটনা সবারই জানা। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন ২৫টি ওয়ানডে এবং ছয়টি টেস্ট। ২০০৭ সালের ১৬ মার্চ খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বালিয়াখালী ব্রিজের কাছে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি এবং তার ক্লাব সতীর্থ সাজ্জাদুল হোসেন সেতু নিহত হন। দুর্ঘটনার সময় রানা নিজে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন।

হোয়াটমোর প্রায় ঘণ্টাখানেক রানার বাড়িতে অবস্থান করেন। পুত্রহারা মাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেন। আসার সময় জামিলা খাতুনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসেন হোয়াটমোর। রানার মা বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল উনি রানাকে ভুলে যাননি। আমার বাড়িতে আসবেন। উনি ইংরেজিতে বলেন তো, তাই অনেক কথাই বুঝতে পারিনি। কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছি যে, আমাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এই অস্ট্রেলিয়ান বারবারই বুঝিয়ে দেন পেশাগত দায়িত্বই সব নয়। ভালোবাসাই জীবনের সব।’ -যুগান্তর
২২ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে