স্পোর্টস ডেস্ক: ভারত আর পাকিস্তান প্রতিবেশী দেশ হলেও ক্রিকেট অঙ্গণে দু’দেশের ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। গভীর গভেষণায় দেখা যাচ্ছে এক দেশ একের পর এক অসাধারণ ব্যাটসম্যান জন্ম দিচ্ছে, আরেক দেশ ফাস্ট বোলার।
পাকিস্তান যেখানে জন্ম দিয়েছে ইমরান খান, সরফরাজ নেওয়াজ, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, আকিব জাভেদ, শোয়েব আকতার থেকে আজকের মোহাম্মদ আমিরদের মত বিশ্ব কাঁপানো ফাস্ট বোলার।আর সেখানে ভারতের আছে সুনীল গাভাস্কার, শচীন টেন্ডুলকার, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, ভিভিএস লক্ষণ, রাহুল দ্রাবিড় থেকে আজকের বিরাট কোহলিরা।
ক্রীড়া সাময়িকী স্পোর্টস্টারের সঙ্গে মুখোমুখিতে এসব নিয়ে কিছুটা হলেও ঝট খুলতে পেরেছেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। তবে তিনি এ নিয়ে খুব পরিষ্কারভাবে কিছু বলতে পারেননি।বলেছেন, খুব সম্ভবত দুই দেশের মানুষের মানসিক পার্থক্যই এর মূল কারণ। উইকেটের চরিত্রও এ ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা রাখে। আবার প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হয় তারকাদের দেখে। গাভাস্কাররা অনুপ্রাণিত করেছেন টেন্ডুলকারদের। টেন্ডুলকার কোহলিদের। যে দেশে টেন্ডুলকারের মতো তারকা ব্যাটসম্যান খেলে, কিশোররা তো ব্যাটসম্যান হতে চাইবেই।
একদিকে পাকিস্তানের ফাস্ট বোলাররা দ্রুতগতির, অন্যদিকে ভারতে ফাস্ট বোলারের অভাব চিরকালীন।কপিল দেব একটা সময় একার কাঁধে বহন করেছিলেন ভারতীয় দলে পেস আক্রমণের দায়িত্ব। এরপর অনেকেই এসেছেন— মনোজ প্রভাকর, জাভাগাল শ্রীনাথ, ভেংকটেশ প্রসাদ। কিন্তু সত্যিকারের ফাস্ট বোলার তাঁরা কেউই ছিলেন না।
সর্বশেষ ১৫ বছরে জহির খান, আশিস নেহরা, শ্রীশান্ত, ইরফান পাঠানরা দলকে সামর্থ্য দিয়েছেন বটে। তবে তাদেরকে কতটুকুট ফাস্ট বোলার বলা যুক্তিক সেটা আমার জানা নেই।বিষয়টি নিয়ে আকরাম বলেন, ভারতের ক্রিকেটটাই দাঁড়িয়ে আছে ব্যাটিংয়ের প্রাণে ভর করে। অন্য দিকে পাকিস্তানের ক্রিকেটের প্রাণ হলো এর বোলিং। আকরাম যেটিকে বলেছেন ‘ব্যাটিং সাইকি’, আর ‘বোলিং সাইকি’। এর সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘এটা নির্ভর করে আপনি কী ধরনের উইকেট বানাচ্ছেন, আর বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আপনার সংস্কৃতিটা কী রকম।’
ভারতে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন আকরাম। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আরও একটি সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন, ‘পাকিস্তানে যখন আমরা একজন সত্যিকারের ফাস্ট বোলার খুঁজে পাই, তখন তাকে যত জোরে পারে বল করতে উৎসাহ দেই। ওর অ্যাকশন বদলে ফেলি না। উপদেশ দিয়ে দিয়ে মাথা ভারী করে ফেলি না। ভারতে হলে ওই একই বোলারটিকে এক একাডেমি থেকে আরেকটিতে পাঠানো হবে।’
পেস-সংকটে ভারত নতুন যাকে পায়, তাকে নিয়েই হয় মাতামাতি। এখন যেমন জসপ্রীত বুমরাকে নিয়ে হচ্ছে। আকরাম বলেছেন, বুমরাকে তাঁর মতো থাকতে দিতে হবে, ‘ভারতে যখনই কোনো ফাস্ট বোলার ভালো করে, তখনই তাকে আকাশে তুলে দেওয়া হয়, এটা ঠিক না। বুমরাকে অবশ্যই তার মতো করে খেলতে দেওয়া উচিত, উপদেশের ভারে ওকে জর্জরিত করাটা ঠিক হবে না।’ সূত্র : প্রথম আলো
২৮ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর