স্পোর্টস ডেস্ক: স্টার্কের চিরচেনা রূপটায় কি তবে খানিক মরিচা ধরলো? গত দুই বিশ্বকাপের সঙ্গে এবারের বিশ্বকাপের পারফর্ম্যান্স দেখলে এমনটা মনে হতেই পারে।
২০১৫ সালে ২২ আর ২০১৯ বিশ্বকাপে রেকর্ড ২৭ উইকেটের পর এবারের আসরে তার উইকেট সংখ্যা মোটে ১০। দল সেমিফাইনালে গেলেও মিচেল স্টার্ক যে স্বভাবসুলভ বোলিং উপহার দিতে পারছেন না, তা স্পষ্ট।
বয়সটা অবশ্য খুব যে বেশি তা নয়। মোটে ৩৩। ক্রীড়াবিদদের জন্য অভিজ্ঞতা আর শারীরিক সামর্থ্যের উজ্জ্বল সময় বলা যায় একে। আবার এই একই সময়ে অবসরের ভাবনাটাও উঁকি দেয়। সেমিফাইনালের আগে সেই অবসর নিয়েই কথা বললেন স্টার্ক। জানালেন, পরের বিশ্বকাপ খেলার কোন সম্ভাবনা নেই। আবার লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় দিতে ওয়ানডে ফরম্যাটকে আগে গুডবাই জানাবেন, এও বললেন তিনি।
সঙ্গে স্টার্ক এও জানিয়েছেন, এবার বিশ্বকাপে নকআউট পর্বের ম্যাচ দিয়েই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ইচ্ছা তাঁর নেই। এক যুগের বেশি সময় ধরে ওয়ানডে ফরম্যাটে দেশকে সার্ভিস দিয়ে যাওয়া স্টার্ক খেলা চালাতে চান আরও কিছু দিন।
২০২৭ বিশ্বকাপেও নিজের খেলার কোনো সম্ভাবনাই দেখেন না স্টার্ক, ‘বিশ্বকাপের পরেও (ওয়ানডে) খেলব। তবে আগামী বিশ্বকাপে না খেলার ব্যাপারে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই। এটা নিয়ে ভাবনাই নেই। চার বছর লম্বা সময়।’
এফটিপি বলছে, বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ওয়ানডে ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরপর সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তারা খেলবে ৫০ ওভারের ক্রিকেট। এরপর ২০২৫ সালে রয়েছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।
সারাবিশ্বেই যে ওয়ানডে ক্রিকেটের কদর অনেকটাই কমে আসছে, সেটা বুঝিয়ে বলার জন্য এটুকুই হয়ত যথেষ্ট। আর স্টার্কের ভাবনাতেও তাই ঘুরছে ওয়ানডেকে আগে বিদায় জানানোর কথা।
‘আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেটই সর্বোচ্চ বিন্দু। টেস্ট ছাড়ার আগে আমি অন্য সবকিছু ছেড়ে দেব। আমার কাছে (বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল) অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আরেকটি ওয়ানডে ম্যাচের বেশি কিছু নয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে পথের শেষটা এখনো হয়নি আমার।’
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। এবারের বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ৬.৫৫ ইকোনমি রেটে বোলিং করে এ পর্যন্ত ১০ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। নিজের সেরাটা এখনো দিতে পারেননি। সে কথা জানেন তিনি নিজেও, ‘যে মানে থাকতে চেয়েছিলাম, অবশ্যই সেই মান অনুযায়ী খেলতে পারছি না...কিংবা সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপে যেমন খেলেছি, সেই মানেও নেই। তবে শেষ পর্যায়ে এসে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার সুযোগটা পাচ্ছি।’
২০১০ সালে ওয়ানডে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক স্টার্কের। এক যুগের বেশি সময়ে দেশের হয়ে ১১৯ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৩০টি উইকেট।