শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩, ০৩:০৩:১৯

জানেন, কোন ঘটনা ভাগ্য খুলে দেয় শামির!

জানেন, কোন ঘটনা ভাগ্য খুলে দেয় শামির!

স্পোর্টস ডেস্ক : কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকার বলেন- ‘একজন ভারতীয় আমার রেকর্ড ভেঙেছে, আর সেটি আমার নিজের মাঠে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মতো মঞ্চে, এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে।’

বুধবার ওয়াংখেড়েতে দাঁড়িয়ে শচিন বিরাট কোহলিকে নিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন। তখন বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল ম্যাচের মাত্র অর্ধেক খেলা শেষ হয়েছে। ৩৯৭ রানের বড় পুঁজি ভারতের সংগ্রহে। 

বিরাট কোহলি, ওয়ানডেতে ৫০তম সেঞ্চুরি করে সর্বোচ্চ মর্যাদার মুকুট মাথায় দেওয়া ক্রিকেটের রাজা। ভারত জিততে যাচ্ছে এবং পুরো বিশ্ব প্রস্তুত হচ্ছে বিশেষ সব শব্দমালা দিয়ে রাজাকে বরণ করে নিতে। 

ঠিক সেই সময়ে গল্পে আগমন এক নির্বাক চরিত্রের। হাতের কারিশমা দিয়ে তিনি যা করে দেখালেন তাতে রাজাও বনে গেলেন পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেতা। তিনি মোহাম্মদ সামি।   

ওয়াংখেড়ের প্রথাগত ব্যাটিং সহায়ক পিচে ৫৯ ডেলিভারিতে ৫৭ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন শামি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক সবুজে মোড়া পিচেও এর আগে কেউ তা করে দেখাতে পারেননি। 

বিশ্বকাপে নকআউট ম্যাচে এর আগে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্যারি গিলমোর। লিডসের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৭৫ আসরে। বিশ্বকাপের আগে হয়ে যাওয়া এশিয়া কাপেও একাদশে নিয়মিত ছিলেন না ৩৩ বছরের শামি। বিশ্বকাপেও তাই। ভাগ্য সাহসীদের সঙ্গে থাকে। 

স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স, নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ মিলিয়ে বিভীষিকাময় সময় পার করা শামির সম্বল বলতে ছিল এই সাহসই। হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে পড়ে ছিটকে যাওয়া আর ব্যাট হাতে কার্যকর শার্দুল ঠাকুরের ম্রিয়মাণ পারফরম্যান্স ভাগ্য খুলে দেয় শামির।

ধর্মশালায় কিউইদের সঙ্গে ম্যাচে একাদশে সুযোগ পেয়েই নিয়ে নেন ‘ফাই-ফার’। আর কে রোখে তাকে! ইংল্যান্ড ম্যাচে ৪ উইকেটে সন্তুষ্ট থাকলেও তার পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে লজ্জায় ডোবানো ম্যাচে আরও একবার ৫ উইকেট। 

গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচে নেন মাত্র ৩ উইকেট। যা আবার পুষিয়ে দিলেন সেমিফাইনালে। এই বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়ে তিনিই এখন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। 

গত আসরে এজবাস্টনে ইংলিশদের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন শামি। এবারেরগুলো মিলিয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৪টি ‘ফাই-ফার’ এখন তার।

২০১৫ আসরে ১৭টি, ২০১৯-এ ১৪টি আর এবার ২৩টি। বিশ্বকাপে পঞ্চাশ উইকেট শিকারিদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম তিনি। ১৭ ইনিংসে ৭৯৫ ডেলিভারিতেই করেছেন তা। তার আগে মিচেল স্টার্কের এ কীর্তি গড়তে লেগেছিল ১৯ ইনিংসে ৯৪১ ডেলিভারি। আর এ সাফল্যের পেছনের রহস্য শামির ছোটবেলার কোচ বদরুদ্দিনের ভাষায় ‘কঠোর পরিশ্রম।’

স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে ২০২৩ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে একজন পেসার হিসেবে মোহাম্মাদ শামি যা করেছেন তা অতুলনীয়। আর নিজের শততম ওয়ানডে ম্যাচের দিনে গড়া এই কীর্তি নানা আঙ্গিকেই সবিশেষ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে