হাবিবুর রহমান ইরান, ঢাকা : ক্রিকেটে বাংলাদেশের উন্নতি নজর কেড়ে নেয় ক্রিকেট বিশ্বের। প্রতিটি দেশের কাছেই টাইগাররা বিশেষ আকর্ষণ সুলভ।
এরই অংশ হিসাবে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসর পিএসএলে ডাক পান রেকর্ড সংখ্যেক বাংলাদেশি ক্রিকেটার।
১০ জন ক্রিকেটারকে ডাক দেয় পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটা নজিরবিহীন। এর আগে এক সংঙ্গে এত বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে কোনো টুর্ণামেন্টে নেয়নি কোনো দেশ।
পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও। পরে নিলাম প্রক্রিয়ায় ৪ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার থাকেন পাকিস্তানের বিভিন্ন ফ্রাঞ্জাইজিতে।
ফিটনেস না থাকায় পাকিস্তানের সুপার লিগে মুস্তাফিজকে খেলার অনুমতি দেয়নি বিসিবি। কিন্তু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, স্যার রিচার্ডসনের সাথে তুলনায় আসা তামিম ইকবাল বেশ উৎসাহের সাথে উড়াল দেন পাকিস্তানের সুপার লিগে।
প্রতিভাবান উইকেট কিপার ও ডিপেন্ডেবল মিডল আর্ডারের ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমও পাড়ি দেন পাকিস্তানের সুপার লিগে খেলার জন্য।
কিন্তু টাইগারদের নিয়ে পাকিস্তানের এত আগ্রহ এখন হীতে বিপরীত হতে যাচ্ছে। পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের রয়েছে পুরনো রাজনৈতিক বিরোধ।
পাকিস্তানের মোড়লরা বাংলাদেশকে শাসনের নামে শোষন করেছে কয়েক যুগ। সে প্রসঙ্গ যদিও অতীত। কিন্তু দেশটির ক্রিকেটের অনেক মোড়লদের ধারনা মোটেই বদলে যায়নি।
জাবেদ মিয়াঁদান, রমিজ রাজা বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রুকাশ্যে শত্রু। মাত্র কয়েক মাস আগে আইসিসির উচিৎ বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস বাদ দেয়া বলে তোলপাড় সৃষ্টি করা উক্তি করেছেন তারা।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে তাদের হিংস্র মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ফের। জঙ্গি জঙ্গি আতঙ্কে পাকিস্তানে কোনো বড় টুর্ণামেন্ট বসছে না প্রায় ৬ বছর ধরে।
যে কারণে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসর বসানোর জন্য নিজেদের হোম ভেন্যু হিসাবে ব্যবহারিত হচ্ছে তাদের মিত্রদেশ আরব আমিরাতের বিভিন্ন স্টেডিয়াম।
এখানে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল হয়েছেন চরমভাবে আপমানিত। রমিজ রাজাই অপমান করেছেন এই দুই তারকাকে।
সাকিব আল হাসান নিজেদের প্রথম ম্যাচে করাচির হয়ে অলরাউন্ড পারফর্ম করে ম্যাচ সেরা হন। বাংলাদেশের ক্রিকেটার যে ম্যাচ সেরা হতে পারেন এটা মনে হয় বুঝতেই পারছিলেন না উপস্থাপনায় থাকা রমিজ রাজা।
পুরস্কার নেয়ার সময় রমিজ রাজা সাকিবকে না ডেকে ডাকেন মিসন্সকে। বোকা হয়ে সাকিব আল হাসান। সাকিবকে এভাবে হেয় করেন রমিজ রাজা।
তামিমের দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচ সেরা হন তিনি। তামিম ইংরেজি জানেন কিনা এটা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে দেন রমিজ রাজা।
উর্দু জানা রমিজ রাজা বলেন, তিনি তো বাংলায় কথা বলতে পারেন না। এখন কি করবেন। তামিমকে জিজ্ঞেস করেন তিনি ইংরেজি জানেন কিনা।
তামিম ইকবাল প্রায় ১০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মাঠ কাঁপাচ্ছেন। কত কীর্তি গড়েছেন, ইংরেজিতে কত বক্তব্য দিয়েছেন তা সবই যেন তার অজানা।
মনে হয়ে দেশসেরা ওপেনারকে জীবনে প্রথম দেখেছেন তিনি। তামিম ইকবালের সাথে রমিজ যে আচরণ করেছেন তা গোটা দেশের জন্যই অবমাননাকর।
মোটেই পরিবর্তন আসেনি রমিজদের ধ্যান জ্ঞানে। বারবার বিতর্কে আসছেন রমিজ রাজা। কখন তিনি এই ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকবেন তা কেবল অদৃষ্টই জানে।
তবে বিসিবির হস্তক্ষেপে পিসিবিকে এই বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত এখনই নেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। (লেখক-সাংবাদিক)
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর