তরিকুল ইসলাম সজল: জিসান ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলে থাকলেও শেষ মুহূর্তে মূল দলে জায়গা পাননি, আগে প্লেট জয়ও অর্জন ছিল। কিন্তু সময় বদলেছে। ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর আকাশে ওড়ে স্বপ্নের ঘুড়ি। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় এবারের যুব বিশ্বকাপ ঘিরেও প্রত্যাশা চূড়ান্ত সাফল্য।
সেই স্বপ্নসারথিরা কী ভাবছেন? তা নিয়েই এই আয়োজনে আজ জিসান আলম-এর ভাবনার কথা লিখেছেন তরিকুল ইসলাম সজল।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে তাঁদের উঠে আসার গল্প একেক রকম। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নপূরণে অনেকের অনেক চড়াই-উতরাই পাড়ি দিতে হয়েছে। তবে জিসান আলম এমন গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রে নিজেকে না দেখে ভাগ্যবান মনে করেন।
তাঁর বাবা জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর আলম। প্রথম ব্যাট ধরার কৌশল শেখা বাবার কাছেই। জিসান ক্রিকেট স্কুলে ভর্তিও হন বাবার হাত ধরে। এরপর ছুটে চলা তাঁর।
অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৮ হয়ে এবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলে। এই ওপেনারের ব্যাটে বাংলাদেশের শিরোপা পুনরুদ্ধারের অনেকটাই নির্ভর করছে।
জাহাঙ্গীরের নাম বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাঁড় সমর্থকদের স্মৃতিতে খানিক নাড়া দেওয়ার কথা। দুই ভাই জাহাঙ্গীর ও জুয়েল হোসেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। আরেক ভাই সোহেল হোসেন বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে চাপাতে না পারলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার ছিলেন।
সেই পরিবার থেকেই উঠে আসা এবারের বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলের সদস্য জিসানের। এই ডানহাতি ব্যাটার সেই গল্পই শোনালেন, ‘বাবা-চাচারা ক্রিকেটার ছিলেন, তাঁদের দেখেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। সব সময় তাঁদের মতো হতে চেয়েছি।’
বাবা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে জিসানের মিল খোঁজা যায়। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে একাধিক রেকর্ডের মালিক জাহাঙ্গীর। বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে থাকলেও শেষ মুহূর্তে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে দলভুক্ত করতে নির্বাচকদের কাঁচিতে কাটা পড়ে তাঁর নাম। জিসান ২০২২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলে ভালোভাবেই ছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে মূল দলে জায়গা হয়নি তাঁর। এবার সুযোগের সঙ্গে প্রত্যাশার চাপও আঁচ করতে পারছেন জিসান, ‘যেহেতু গতবারও ছিলাম, সে জন্য এবার আমার ওপর সবারই প্রত্যাশা বেশি।’
দলের প্রত্যাশা মিটিয়ে বাবার থমকে যাওয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আক্ষেপও ঘোচাতে চান জিসান, ‘বাবার যে আক্ষেপ, সেটা আমি ঘোচানোর চেষ্টা করব। সর্বাত্মক চেষ্টা করব, বাবার যেটা হয়নি, সেটা পূরণ করতে পারি।’ সে পথ মাড়ানো যে সহজ নয় সেটি জানা জিসানের, ‘জাতীয় দলে খেলা অনেকটা ভাগ্যেরও ব্যাপার। তবে এখন ওসব নিয়ে ভাবছি না। এখন লক্ষ্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো কিছু করা। দেশের জন্য কিছু করা।’
জিসান অবশ্য এরই মধ্যে একটি স্বপ্ন পূরণ করে ফেলেছেন। এবার প্রথমবারের মতো যুব এশিয়া কাপজয়ী দলের একজন তিনি। তবে দলের চাহিদা মেটাতে পারেননি তিনি। ৪ ম্যাচে ৭১ রান যে নিজের সামর্থ্যের পুরোটা নয়, সেটি জানেন জিসান। মেরে খেলতে পছন্দ করা এই ওপেনার বিশ্বকাপ যাত্রার আগে নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার আগে বললেন, ‘আশা করি সেমিফাইনাল খেলব, এরপর ফাইনাল এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেষ্টা করব।’-কালের কণ্ঠ