স্পোর্টস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার কাজে জরুরি ভিত্তিতে দেশে ফিরতে হয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমানকে। চেন্নাইয়ের হয়ে খেলতে পারেননি এক ম্যাচ। টানা দুই ম্যাচে হারের বৃত্তে ছিল তার দলও। আইপিএলে ফিরেই বল হাতে আবারও জ্বলে উঠলেন ফিজ।
৪ ওভার বল করে মাত্র ৫.৫ ইকোনমিতে ২২ রান খরচ করে তুলে নেন দুই উইকেট। তাতে যুজবেন্দ্র চাহালকে টপকে চলতি আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার এখন টাইগার এই পেসার। মুস্তাফিজের চূড়ায় ওঠার দিনে হেসেখেলে জয় পেল চেন্নাই। অন্যদিকে জয়ের হ্যাটট্রিকে আসর শুরুর পর প্রথম হারের মুখ দেখল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
সোমবার (৯ এপ্রিল) এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাইয়ের বোলিং তোপে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানের বেশি করতে পারেনি কলকাতা। শুরু ও মাঝে জাদেজা ও তুষার দেশপান্ডের দারুণ বোলিংয়ের পর শেষটা রাঙান মুস্তাফিজ। জাদেজা ও তুষার তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন। এ ছাড়া দুটি উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজ।
হাতের নাগালে থাকা টার্গেট তাড়ায় খুব একটা বেগ পেতে হলোনা স্বাগতিক চেন্নাইকে। রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের দারুণ ফিফটিতে ১৪ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
চিপক মানেই যেন চেন্নাইয়ের দুর্গ। আজও ইতিহাস পাল্টাল না। ইনিংসের প্রথম বলেই যেন ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা লেখা হয়ে গিয়েছিল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই তুশার দেশপান্ডের বলে পয়েন্টে জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক হয়ে ফেরেন ফিল সল্ট। মাঝে কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ব্যাট হাতে কিছুটা লড়াই চালালেও তাতে বড় পুঁজি গড়া যায়নি।
মুস্তাফিজের জন্য আজ চ্যালেঞ্জ ছিলেন তারই বিপিএল সতীর্থ আন্দ্রে রাসেল। সেই চ্যালেঞ্জটাও ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন দ্য ফিজ। ১৮তম ওভারে ক্যাচও উঠেছিল। উইকেটের পেছনে ফিজের করা বলে রাসেলের কাজটা নেওয়া হয়নি ধোনির। মুস্তাফিজের আগে কাজের কাজ করে রেখেছিলেন অভিজ্ঞ বোলার রবীন্দ্র জাদেজা। এই দুজনের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সুবাদে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে কলকাতার স্কোর উঠে মোটে ১৩৭।
ইনিংসের শেষ ওভারটাও করেছেন মুস্তাফিজ। তাতে এসেই পেয়েছেন কলকাতা অধিনায়ক শ্রেয়াশ আইয়ারের উইকেট। উড়িয়ে মারতে গিয়ে আইয়ার ক্যাচ দিয়েছেন ওই জাদেজার হাতেই। দুই বল পরেই পেয়েছেন মিচেল স্টার্কের উইকেট। এর মাধ্যমে আইপিএলে এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারীর জায়গা আবারও দখলে নেন দ্য ফিজ। শেষ ওভারে দিয়েছেন মোটে ২ রান।
চেন্নাইয়ের স্কোয়াডে ছিলেন না দুই গুরুত্বপূর্ণ বোলার দীপক চাহার এবং মাথিশা পাথিরানা। চাহারের বদলে আসা শার্দুল ছন্দে ছিলেন না মোটেই। তবে মুস্তাফিজ ছিলেন দুর্দান্ত। চিপাকের পিচে ফিজ কতখানি কার্যকর, তারই প্রমাণ দেখা গেল আবার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সুনীল নারিন ও অঙ্গকৃশ রঘুবংশীর দারুণ জুটির মাঝে হিসেবি বোলার ছিলেন ওই মুস্তাফিজই।
যদিও এমন দুর্দান্ত বোলিং ইনিংসের কৃতিত্ব দেয়া যেতে পারে রবীন্দ্র জাদেজাকে। বল হাতে চেন্নাই যখন ধুঁকছিল, তখনই পরপর ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ এই বোলার। একই ওভারে রঘুবংশী আর নারিনকে ফেরান এই স্পিনার। প্রথমজন হয়েছেন এলবিডব্লিউ এবং নারিন ক্যাচ দিয়েছেন থিকশানাকে। এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার জাদেজার আঘাত। এবার আউট হয়েছেন ভেঙ্কেটশ আইয়ার।
মাঝের ওভারে কলকাতাকে চেপে ধরেছিলেন দেশপান্ডে এবং থিকশানা। দুজনের বোলিংয়ে দিশেহারাই ছিল তারা। দেশপান্ডে পরবর্তীতে রাসেল আর রিঙ্কু সিংয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন। আর ইনিংসের শেষটা রাঙিয়েছেন মুস্তাফিজ। একই ওভারে আইয়ার এবং স্টার্ককে ফিরিয়ে পার্পল ক্যাপের দখল নেন বাংলাদেশের এই বোলার।
টার্গেট তাড়ায় রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে শুরুটা ভালোই করেছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। তবে আজও ইনিংস বড় করতে পারলেন না রাচিন। ৮ বলে ১৫ করে ফিরেছেন। তবে আরেক প্রান্তে ৫৮ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রুতুরাজ।