স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে নাজমুল হাসান পাপন ২০১২ সালে প্রথমবার সরকার কর্তৃক মনোনীত হয়ে আসেন। এরপর ২০১৩ সাল থেকে বিসিবি সভাপতি পদটি নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয়। যেখানে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে দুই মেয়াদে নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পাপন। আর সবশেষ চতুর্থ মেয়াদে ২০২১ থেকে বোর্ড সভাপতির পদে দায়িত্ব নেন। পাপনের বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালে। তবে পাপন এখন কোথায়?
আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ থেকে পালানোর পর দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক পরিবর্তন চোখে এসেছে। মন্ত্রী ক্যাবিনেট ও সংসদ ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই বিভিন্ন সংগঠনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সেটার বাইরে নেই দেশের ক্রিকেট আঙ্গিনাও। নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সবশেষ ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে সরকারের মন্ত্রী হন। যেখানে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে আছেন এক যুগের বেশি সময় ধরে।
কিন্তু গত তিনদিন ধরেই পাপন ক্রিকেটের দৃশ্যপটে নেই। পাপন ছাড়াও পরিচালকদের মধ্যেও অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরিই যুক্ত ছিলেন। পরিচালকদের মধ্যে নাইমুর রহমান দুর্জয় ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য। আ জ ম নাসির চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র। আরেক পরিচালক শফিউর রহমান নাদেল সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংসদেরই একজন সদস্য।
আওয়ামী সরকারের পতনের পর এদের সকলেই অনুপস্থিত। সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বর্তমান অবস্থান নিয়েও আছে প্রশ্ন। ক্রিকেট পোর্টাল ক্রিকইনফো এক সূত্রের মাধ্যমে জানিয়েছে, বোর্ড সভাপতিও আওয়ামী লীগের অন্য অনেক নেতার মতোই দেশত্যাগ করেছেন। যদিও সেই একই প্রতিবেদককে অন্য অনেকগুলো সূত্র জানায়, নাজমুল হাসান পাপন এখনো দেশেই অবস্থান করছেন।
পাপনের জাতীয় সংসদের পদ চলে গেলেও ক্রিকেট বোর্ডের অভিভাবক এখন পর্যন্ত তিনিই থাকছেন। কেননা বর্তমান মেয়াদ অনুযায়ী ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিনিই থাকছেন ক্রিকেটের শীর্ষকর্তা। ক্ষমতার পালাবদলে তাকে সরানোরও কোনো সুযোগ থাকছে না। বোর্ডের ওপর সরকার বা অন্য কোনো শক্তির উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
গত বছর লংকান ক্রিকেট বোর্ডকে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ‘শ্রীলংকা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল।’
এদিকে এমন অবস্থায় অন্তবর্তী কমিটির জন্য তাই নাজমুল হাসান পাপনের মেয়াদ শেষের অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। বর্তমানে ক্রিকেট বোর্ডে তিনি চার বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে বিসিবি সভাপতি পদে বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে তার। এরপরেই দেখা যেতে পারে অন্তবর্তী একটি কমিটি। সেখান থেকেই দেখা যাবে নতুন বোর্ড সভাপতি।
এর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে দুবার দেখা গিয়েছিল অন্তবর্তীকালীন কমিটি। এর আগে ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল দুবার অন্তবর্তীকালীন বা অ্যাড-হক কমিটি দিয়েছিল। ২০০৭ সালে সে সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেয়া হয়েছিল অ্যাড-হক কমিটি। এছাড়া ২০১৩ সালে আ হ ম মুস্তফা কামাল ও নাজমুল হাসান পাপনের মধ্যবর্তী সময়েও ছিল অন্তবর্তীকালীন এক কমিটি।