স্পোর্টস ডেস্ক : ইনজুরির কারণে প্রায় দেড়বছর খেলার বাইরে ছিলেন পাকিস্তানের তরুণ পেসার ইহসানউল্লাহ খান। গত বছর তার চোট নিয়ে চিকিৎসাজনিত অবহেলার অভিযোগ ওঠে পিসিবির বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি পাকিস্তানি এই গতিতারকা মাঠের ক্রিকেটে ফিরেছেন। তবে গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত হওয়া পিএসএলের ড্রাফটে কোনো দলই তার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। সেই ক্ষোভে পিএসএল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এই পেসার।
গতকাল লাহোর ফোর্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) আসন্ন দশম আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট। যেখানে দল পাননি ইহসানউল্লাহ। এর আগে নিজের খেলা সর্বশেষ অষ্টম আসরে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন এই ডানহাতি পেসার। কিন্তু এবার কোনো দলই তার নাম না ডাকায় আসরটিতে খেলা হচ্ছে না ইহসানের। সেজন্য আর কখনোই পাকিস্তানের জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট পিএসএলে না খেলার ঘোষণা দিয়েছেন।
স্বদেশি গণমাধ্যমে ক্ষুব্ধ ইহসান জানান, ‘একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। যদি আপনি পারফর্ম করেন, এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি আপনার পেছনে লেগে থাকবে। এখন আমার লক্ষ্য তাদের নিজের পেছনে আটকে রাখা এবং আমার সেরকম পারফরম্যান্স দরকার। আমি ১৫০-১৬০ কিলোমিটার গতিতে বল করব এবং যারা বলেছে আমি ১৩০-১৩৫ গতির বোলার, তাদের আগামী এক-দেড় মাসে দেখিয়ে দেবো। ইনজুরির আগে আমি যেমনটা ছিলাম, তারচেয়ে আরও ভালো বোলার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করব।’
এর আগে মুলতান সুলতানের হয়ে পিএসএলের অষ্টম আসরে খেলেছেন ইহসান। তাকে নিয়ে করা ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিক আলি তারিনের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ এই ক্রিকেটার। ডান কনুইয়ের ইনজুরির কারণে ইহসান আর কখনোই আগের মতো বোলিং করতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছিলেন আলি তারিন। তিনি বলেছিলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক (চোট) পুনর্বাসন, তবে আমরা ইহসানউল্লাহকে সেরা সার্জনের কাছে নিয়েছি। তিনি আমাদের দুঃসংবাদ দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘আমি সার্জারি করতে পারি, কিন্তু এটিতে খুব একটা উন্নতি হবে না। আগের সার্জারির কারণে তার কনুই আগের মতো সোজা হবে না এবং কখনোই আর আগের মতো বোলিং করতে পারবে না সে।’
সে কারণে ইহসানের গতিও বেশ কমে গেছে বলে ধারণা মুলতান ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকের, ‘এটি খুবই দুভাগ্যের বিষয় যে, একজন ব্যক্তি (পিসিবির চিকিৎসক) নিজের দুর্বলতা লুকাতে গিয়ে একজন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে। সে কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে সে (ইহসান) ১৩০-১৩৫ কিলো গতিতে বল করছে। অথচ সে ছিল আমাদের ১৫৫ কিলোমিটার গতির বোলার।’ এই মন্তব্যই মূলত ক্ষেপিয়ে তুলেছেন তরুণ এই পেসারকে।
নিজের সাবেক ফ্র্যাঞ্চাইজিও যোগাযোগ করেনি বলে এখনই পিএসএল অধ্যায়ের ইতি টানতে চান ইহসানউল্লাহ, ‘আমি দেখেছি– এটি স্বার্থপর মানুষদের স্বার্থপর দুনিয়া। আমি আর ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলতে চাই না। আজকের পর থেকে এটি শেষ। আমি এই টুর্নামেন্ট বয়কট এবং পিএসএল থেকে অবসর নিচ্ছি। আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই, পিএসএল খেলে নয়। যখন আপনি বিকল্প পেয়ে যাবেন, তখন আর অতীত ভাববেন না। অথচ তিনি (আলি তারিন) আমার পারফরম্যান্স ও প্রতিভা মূল্যায়ন করা উচিৎ ছিল।’
পিএসএলের অষ্টম আসরে লাহোর কালান্দার্সের কাছে ১ রানে হেরে শিরোপা খুইয়েছিল মুলতান। যাদের হয়ে ১২ ম্যাচ খেলে ১৫.৭৭ গড়ে ২২ উইকেট নেন ইহসানউল্লাহ। ২০২৩ সালের এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তিনি কনুইয়ের চোটে পড়েন। যা ২২ বছর বয়সী এই পেসারের কাছ থেকে দেড়বছরেরও বেশি সময় কেড়ে নিয়েছে। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে মাঠে ফেরেন ইহসান। এখন পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান জাতীয় দলে একটি ওয়ানডে ও চারটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন।