স্পোর্টস ডেস্ক : এবারের বিপিএলে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে চলছে দুর্বার রাজশাহী। কয়েকদিন আগে পারিশ্রমিক নিয়ে জটিলতায় অনুশীলন বয়কট করেছিল দলটির ক্রিকেটাররা। আর গতকাল আরো একধাপ এগিয়ে গেল। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগে পারিশ্রমিক না পাওয়ায় মাঠেই আসেননি দলটির বিদেশি ক্রিকেটারদরা।
নিয়ম অনুযায়ী দলে অন্তত দুই জন বিদেশি ক্রিকেটার রাখার নিয়ম থাকলেও পরে টেকনিক্যাল কমিটির সিদ্ধান্তে বিশেষ ব্যবস্থায় কোনো বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়াই মাঠে নামে রাজশাহী।
তবে দেশি ক্রিকেটার নিয়েও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুরকে হারিয়ে দেয় তাসকিনের দল। জয়ের পর ম্যাচের আগের বিব্রতকর অভিজ্ঞতা শোনালেন রাজশাহীর অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ।
দারুণ জয়, তাহলে কি দেশি একাদশ নিয়েই খেলবেন এখন থেকে? এমন প্রশ্নের জবাবে তাসকিন বলেন, (হাসি) নাহ, আসলে দেখুন, সত্যি বলতে আজকে দিনের শুরু থেকেই অনেক নাটক দেখেছি আমরা, সব ক্রিকেটাররাই।
পরে শেষের দিকে আমি যতটুকু শুনেছি যে, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে টাকা নিয়ে বিদেশি ক্রিকেটারদের রুমে নক করেছে। কেউ দরজা খোলেনি। শেষ সময়ে আমরা স্থানীয় ক্রিকেটাররাই ছিলাম।
এখন যেটা করেছি যে, ম্যানেজার-কোচ সবাই মিলে… শুরুতে সবাই আপসেট ছিল, আমরাও ছিলাম… যখন ১২০ রান হলো (১১৯) এবং আমরা ব্যাটিং করে দেখলাম যে, আজকের উইকেট এত সহজ নয়, হয়তো ১৫-২০ রানের ঘাটতি ছিল, তবে দলীয় প্রচেষ্টা, সবার অবদান আর মন থেকে চেষ্টা করে পুরস্কার পাওয়া গেছে।
তাসকিন জানান, (মাঠে) যাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে শুনি, বিদেশি ক্রিকেটার কেউ যাবে না। তখন আমাদের বোর্ড থেকে আমাদের ফোন দিয়ে বলল যে, ‘অন্তত তোমরা আসো, খেলো।’ বিদেশি ক্রিকেটারদেরও ফোন করেছিল আমাদের বোর্ড থেকে। তাদেরকে বলেছে যে, ‘পেমেন্ট কোনো ইস্যু নয়, পেমেন্ট হয়ে যাবে।’ তবু তারা আসেনি।
যারা টাকা না পেয়ে মাঠে আসেননি, তারা বিদেশি হলেও তো আপনার সতীর্থ। আপনার কি সহানুভূতি কাজ করছে তাদের জন্য? এই প্রশ্নে তাসকিন বলেন, আসলে দেখুন, আমাদেরকেও আজকে চেক দেওয়া হয়েছে, বাকি ২৫ শতাংশ। কালকে আমরা প্লেস করব..। চেক বাউন্স হওয়া নিয়ে তাসকিন বলেন, ওটা হলে আর কী করা! আশা করি বাউন্স-টাউন্স হবে না। মিরপুরের এই উইকেটের মতো চেক বাউন্স করলে সমস্যা আছে… (হাসি)। আশা করি, এমন করবে না।
বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়া খেলতে খারাপ লেগেছে কিনা? এমন পশ্নে তাসকিন জানান, খারাপ তো লেগেছেই যে, বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়া খেলছি। পরে শেষে আমরা বোর্ডকে অনুরোধ করেছি যে, আমাদেরকে স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে খেলার সুযোগ দেওয়া হোক। কারণ এখানে আমাদেরও তো ক্যারিয়ারের বিষয়। পরে বোর্ড রাজি হয়েছে। তবে ব্যাপারটি আমাদের জন্য সুখকর ছিল না শুরুতে। পরে ম্যাচটি জেতায় স্বস্তি পাচ্ছি।
সোমবারই আপনাদের আরেকটি ম্যাচ, ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই। বিদেশি ক্রিকেটারদের পাবেন? তাসকিন বললেন, এখনও হোটেলে যাইনি। আশা করি… ম্যানেজমেন্ট যদি তাদেরকে পে করতে পারে এবং তারা যদি আসে…চাইব অবশ্যই তারা আসুক, এলে তো দলের জন্য ভালো। অন্তত দু-তিনজন বিদেশি হলেও দলটা আরেকটু শক্তিশালী হয়। তবে এখনও সেটা বলতে পারছি না, যেহেতু হোটেলে যাইনি। ম্যানেজমেন্ট পে করলে তারা আসবে হয়তো।
আপনি কি অধিনায়ক হিসেবে বিদেশি ক্রিকেটারদেরকে অনুরোধ করেছিলেন?
তাসকিন জানান, ম্যানেজার নাকি পয়সা নিয়েও নক করেছে। ওরা দরজা খোলেইনি। ওরা হয়তো ভেবেছে যে, এমনিই অনুরোধ করতে এসেছে।
আমি গিয়েছিলাম ওদের কাছে। ওরা বলেছে, ‘দেখো, টাকা না পেলে আমরা যাব না।’ আমি বলেছি, ‘ঠিক আছে, তোমাদের সিদ্ধান্ত।’ আমি আর কী বলব, আমিও তো একজন ক্রিকেটার!