স্পোর্টস ডেস্ক : চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এনামুল হক বিজয় ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেই ছবিটা ছিল মূলত একটি ডায়েরির পাতা। ২০১৪ সালের সেই ডায়েরির পাতায় এই ক্রিকেটার লিখে রেখেছিলেন একটা প্রতিজ্ঞার কথা–‘২০২৫ ঐ বছর শেষ হবার আগে আমার সেঞ্চুরি থাকবে ৫০টা’। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির সংখ্যা ১০০টি। স্বীকৃত ক্রিকেটে ঠিক এর অর্ধেক সেঞ্চুরির মালিক এখন এনামুল হক বিজয়। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন সংস্করণ মিলিয়ে স্বীকৃত ক্রিকেটে ৫০ সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি গড়লেন ৩২ বছর বয়সী বিজয়। নিজের কাছে করা প্রতিজ্ঞা রক্ষা করলেন তিনি।
বিকেএসপিতে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের পঞ্চাশতম সেঞ্চুরিটি হাঁকিয়েছেন গাজী গ্রুপ স্পোর্টসের অধিনায়ক বিজয়। শরিফুল ইসলামকে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে এই মাইলফলকে পৌঁছান তিনি।
এনামুলের সেঞ্চুরিতে জয় পেয়েছে তার দলও। সুপার সিক্সের এই ম্যাচে ২২৩ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংস ওপেন করা বিজয় ১০৫ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ১১০ রানে। ৪৩ ওভারে কমে আসা ম্যাচে গাজী ৭ উইকেট ও ২ ওভার হাতে রেখেই জিতে গেছে।
এর আগে গত ২৫ মার্চ ডিপিএলেই ৪৯তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন বিজয়। ৫০ সেঞ্চুরির ২৪টিই বিজয় করেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে হাঁকিয়েছেন ২৩ সেঞ্চুরি। এর মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে হাঁকিয়েছেন ৩টি। আর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে হাঁকিয়েছেন বাকি ৩ সেঞ্চুরি।
দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে স্বীকৃত ক্রিকেটে আর কারোরই এতোগুলো সেঞ্চুরি নেই। গত জানুয়ারিতেই বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক বনে গেছেন তিনি। বিপিএলে রাজশাহীর হয়ে খুলনার বিপক্ষে ৪৭তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে পেছনে ফেলেছিলেন নাঈম ইসলামকে। স্বীকৃত ক্রিকেটে নাঈম ইসলামের সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪৬টি।
ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পারফর্মার বিজয় জাতীয় দলে আশার আলো জ্বালিয়েও বড় কিছু হতে পারেননি। সেই আক্ষেপ হয়তো কিছুটা লাঘব হবে নিজের কাছে করা প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে পারায়। কিংবা হয়তো আক্ষেপ আরও বাড়বে। এই আলো ঝলমলে পারফর্ম্যান্সের কিছুটা যদি জাতীয় দলের হয়েও দেখাতে পারতেন। আক্ষেপ আদলে বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই হওয়ার কথা।