সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৩:১৯:৩৯

‘এভাবে যাওয়া যায় না, হাঁটব কীভাবে’ ক্রিকেটার নাসিরকে তামিমা

‘এভাবে যাওয়া যায় না, হাঁটব কীভাবে’ ক্রিকেটার নাসিরকে তামিমা

স্পোর্টস ডেস্ক : অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে করা মামলা শুনতে বিচারক বিব্রত প্রকাশ করে অন্য আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে তাদের আত্মপক্ষ শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন আদালতে হাজির হন নাসির ও তার স্ত্রী তামিমা। এদিন বেলা ১১টা ৫১ মিনিটের দিকে শুনানি শেষে এজলাস কক্ষ থেকে বের হন নাসির-তামিমা। এরপরেই তারা গণমাধ্যমের ক্যামেরার মুখে পড়েন।

এ সময় তাদের মুখে কালো মাস্ক পরে ক্যামেরা থেকে মুখ লুকাতে দেখা যায়। স্ত্রীর সামনে একপ্রকার ঢাল হয়ে দাঁড়ান নাসির। এরপরও যখন গণমাধ্যমের ক্যামেরা থেকে নিস্তার নেই দেখে স্ত্রীর হাত ধরে জোরে হাঁটতে দেখা যায় নাসিরকে। গণমাধ্যমের ক্যামেরা থেকে তবুও রেহাই না পেয়ে আবার থমকে দাঁড়ান তারা দুজন। পরে আবার পিছনের দিকে স্ত্রীর হাত ধরে জোরে হাঁটতে থাকেন।

এ সময় নাসিরকে তার স্ত্রী তামিমা বলেন, ‘এভাবে যাওয়া যায় না। হাঁটব কীভাবে।’

এ সময় নাসিরের সঙ্গে থাকা কয়েকজন সাংবাদিকদের ওপর বিরক্ত হন। পরে তামিমা সিএমএম আদালতের সিঁড়ি দিয়ে ও ক্রিকেটার নাসির সিজেএম আদালতের ভবনের দিকে দুজনকে দুদিকে যেতে দেখা যায়।

এদিকে এদিন নাসির-তামিমার পক্ষে অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু আদালতে দুটি আবেদন করেন। এর মধ্যে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি আবেদন করেন। কারণ হিসেবে বলেন, এ মামলার বিচার চলছে। এ অবস্থায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গত ১৬ এপ্রিল মিডিয়াতে বলেন নাসির হোসেন ব্যভিচার করে তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। এবিষয়ে আদালতে বিচার চলছে। বিচার শেষে আদালত রায়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন নাসির তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন কিনা এবং ব্যভিচারের সম্পর্ক করেছেন কি না। একই সঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলার পুরো অভিযোগ না শুনিয়ে সারসংক্ষেপ পড়ে শোনানোর আবেদন করেন।

এদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবী আগে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। আইন অনুযায়ী তিনি এখন আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না।’

দুপক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত বলেন,‘উভয়পক্ষেরই আবেদন দেওয়ার অধিকার আছে। এটা একটা ব্যস্ত আদালত। এক মামলার শুনানি করতে যে ধৈর্য দরকার, এত সময় এই আদালতের নেই। এতে অন্য মামলায় ইফেক্ট পড়ে। আমি আসলে বিব্রতবোধ করছি। মামলাটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দেই। এতে আপনারা কি নাখোশ হবেন?’তখন আইনজীবীরা বলেন, এতে তাদের আপত্তি নেই।

তখন আদালত বলেন, মামলাটা বদলি করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠিয়ে দিচ্ছি। সিএমএম মামলাটি একটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দেবেন।

এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালত ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই বছরের ৬ মার্চ মহানগর দায়রা আদালতে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিব্যুল্লাহ হিরু। অন্যদিকে সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান।

২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাদী ও বিবাদী উভয়পক্ষের রিভিশন অবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদ মামলাটির বিচার চলবে বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার মামলার দায় থেকে অব্যাহতি থাকবেন বলে আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাম্মির সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে