স্পোর্টস ডেস্ক : ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পরপরই ভারতীয় দুই অভিজ্ঞ তারকা রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি আন্তর্জাতিক ফরম্যাটটি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এবার টেস্ট ক্রিকেটেও রোহিতের পর একই পথে হাঁটতে চলেছেন কোহলি। কয়েকদিন আগে ভারতীয় ক্রিকেটভক্তদের চমকে দিয়ে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায়ের ঘোষণা দেন দলটির অধিনায়ক। কোহলিও নাকি অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন বিসিসিআইকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। যদিও এখনও কোহলি এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি সামনে আনেনি। টেস্ট থেকে এই তারকা অবসরের সিদ্ধান্ত জানানোর পর তাকে নাকি বিষয়টি পুনঃবিবেচনার আহবান জানিয়েছে বিসিসিআই। হঠাৎ করেই কাছাকাছি সময়ে টেস্টে দুই তারকার বিদায় অবশ্য ভারতের জন্য কিছুটা উদ্বেগজনক। এরপর তাদের পুরো ব্যাটিং লাইনআপই হবে তারুণ্য নির্ভর।
যদিও শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ এবং পাইপলাইনেও যথেষ্ট বিকল্প আছে ভারতের হাতে। তবে টেস্টে কোহলির এত তাড়াতাড়ি বিদায় চাইবে না ক্রিকেট বোর্ড। এমনকি রোহিতের অবসরের সিদ্ধান্তেও নাকি তারা অবাক হয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। এক সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘তিনি (কোহলি) মনস্থির করে ফেলেছেন এবং টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বোর্ডকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজকে সামনে রেখে তাকে আবারও বিষয়টি ভাবতে বলেছে বিসিসিআই। এরপর আর নতুন করে কিছু জানাননি কোহলি।’
ভারতের সর্বশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে ধুঁকেছেন কোহলি-রোহিত উভয়েই। যদিও কোহলি একটি সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ওই সিরিজে। তবে ব্যাট হাতে এই দুই তারকা ক্রিকেটারের অধারাবাহিকতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। রোহিতের পর কোহলিও যদি টেস্ট থেকে বিদায়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন, তবে ব্যাটিং লাইনআপে অনভিজ্ঞতায় ভুগবে ভারত। যদিও শুভমান গিল, যশস্বী জয়সওয়ালদের সঙ্গে মিডল অর্ডারে লোকেশ রাহুল ও ঋষভ পান্তরা অনেকদিন ধরেই খেলছেন। এ ছাড়া ভারত বর্তমানে টেস্টে অধিনায়কত্বের জন্য দীর্ঘমেয়াদে তরুণ কাউকে খুঁজছে।
৩৬ বছর বয়সী এই তারকা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ১২৩টি টেস্ট খেলেছেন। যেখানে ভারতের জার্সিতে তিনি ৪৬.৮৫ গড়ে করেছেন ৯২৩০ রান। করেছেন ৩০ সেঞ্চুরি ও ৩১ হাফসেঞ্চুরি। তবে গত পাঁচ বছর ধরেই কোহলির রানের গড় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। সর্বশেষ ৩৭ টেস্টে মাত্র তিন সেঞ্চুরিতে করেন ১৯৯০ রান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পাঁচ টেস্টে তার গড় ছিল ২৩.৭৫। আউট হওয়া আট ইনিংসের মধ্যে সাতটিতেই তিনি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন।
কোহলি শেষ পর্যন্ত তার মন না বদলালে রোহিতের মতো তাকেও কেবল ভারতের জার্সিতে ওয়ানডে ফরম্যাটে দেখা যাবে। দুজনেরই লক্ষ্য এই সংস্করণে ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলে যাওয়া। আবার, রোহিত-কোহলির অনুপস্থিতিতে ইংল্যান্ড সফরে ভারতের স্কোয়াড কেমন হয় সেটাই দেখার বিষয়। আগামী ২০ জুন থেকে ভারত ইংলিশদের মাটিতে ৫ টেস্টের সিরিজ খেলবে। এই সিরিজ দিয়ে নতুন অধিনায়কের অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে ভারত। এদিক থেকে নাকি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন শুভমান গিল।