শনিবার, ২১ মে, ২০১৬, ০৪:৩৭:০৬

কেমন আছেন টাইগার দলের সেই সৈয়দ রাসেল ?

কেমন আছেন টাইগার দলের সেই সৈয়দ রাসেল ?

স্পোর্টস ডেস্ক: ‘রাসেলকে খুব মিস করি’—কদিন আগে কথাপ্রসঙ্গে বলছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সৈয়দ রাসেল ও আবদুর রাজ্জাক তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে মাশরাফি-রাজ্জাক খেলছেন কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে। রাজ্জাককে নিজের দলে পেয়ে ভীষণ খুশি মাশরাফি। অধিনায়কের মনে পড়েছিল আরেক বন্ধু রাসেলের কথাও।

বাঁহাতি মিডিয়াম পেস আর দারুণ সুইংয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে খাবি খাওয়ানো; কৃপণ বোলিং কিংবা দ্রুত ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার দক্ষতায় রাসেল নিজেকে চিনিয়েছিলেন অন্যভাবে। দীর্ঘ সময় পরাজয়ের বৃত্তে আটকে থাকা বাংলাদেশ গত দশকের মাঝামাঝি সময়ে যে কটি স্মরণীয় জয়ে পেয়েছিল, তার অনেকগুলোতেই ছিল তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বগুড়ায় শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারানোর পেছনে স্মরণযোগ্য ভূমিকা ছিল রাসেলের। লঙ্কানরা অলআউট হয়েছিল ২১২ রানে। ১০ ওভারে ২৮ রানে রাসেল পেয়েছিলেন ২ উইকেট। ২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনে ভারত বধেও রাসেলের বড় অবদান ছিল। বিশ্ববিখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপসমৃদ্ধ ভারত প্রথম ৩০ ওভারে তুলতে পেরেছিল মাত্র ৯০ রান, সেটি তাঁর কৃপণ বোলিংয়ের কারণেই। ১০ ওভারে রাসেল দিয়েছিলেন ৩১ রান।

জোহানেসবার্গে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ওভারেই ক্রিস গেইলকে শূন্য রানে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দিয়েছিলেন বিরাট ধাক্কা। ক্রিকেটের ছোট দৈর্ঘ্যে বড় দলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম জয় সেই ম্যাচেই।


বাংলাদেশ ক্রিকেটে বাঁহাতি পেস বোলিংয়ের রোমাঞ্চ প্রথম দেখিয়েছিলেন রাসেলই। কথা হলো, ৬ টেস্ট, ৫২ ওয়ানডে ও ৮ টি-টোয়েন্টি খেলা রাসেল এখন কোথায়? তাঁর সঙ্গে যখন কাল রাতে কথা হলো, তিনি যশোরের ঝিকরগাছায় নিজ বাড়িতে। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলেছিলেন কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমির হয়ে। এবারের প্রিমিয়ার লিগের ‘প্লেয়ার ড্রাফটে’ ছিলেন ‘সি’ গ্রেডে। কিন্তু কোনো দল তাঁকে নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি। তবে কি ক্যারিয়ারের সমাপ্তি রেখা ছুঁয়ে ফেললেন ৩১ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার?

রাসেল জানালেন ভিন্ন কথা। অনেক দিন ধরেই চোটাক্রান্ত তিনি, ‘গত মৌসুমের পরই বাঁ কাঁধের চোটে ভুগছি। অপারেশন করেছিলাম গত ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। আরেকবার অপারেশন করতে হবে। আমার চোটের বিষয়টি জানে বলেই হয়তো এবার লিগে কোনো দল আমাকে ডাকেনি বা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’

২০১০ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা রাসেলের ক্যারিয়ার অনেক দিন ধরেই ঘরোয়া ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ। তবে মাঝে গুজব ছড়িয়েছিল, খেলা ছেড়ে তিনি এলাকায় কাপড়ের ব্যবসা করছেন। ঝিকরগাছায় তাঁর দোকানও আছে। খবরটির কোনো সত্যতা নেই বলেই জানালেন রাসেল, ‘এখনো খেলাধুলা ছাড়া আয়-উপার্জনের আমার অন্য কোনো উৎস নেই। যে কাপড়ের দোকানের কথা শুনেছেন, ওটা আসলে আমার ছোট ভাইয়ের। বছর দুয়েক আগে এক স্থানীয় সাংবাদিকের সঙ্গে ওই দোকানে বসে কথা বলেছিলাম। এরপর সেটা ছড়িয়েছে অন্যভাবে।’

অনেক দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকলেও ক্যারিয়ারকে আরও কিছুদূর টেনে নেওয়ার লক্ষ্য বাঁহাতি পেসারের। তবে সেটি করতে হলে তাঁকে আরেকবার কাঁধে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এ বিষয়ে বিসিবির সহায়তা চাইলেন রাসেল, ‘এর আগে একবার অপারেশনের জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। বোর্ড আমাকে সহায়তা করেছিল। এবারও ভারতে যেতে হবে। দেশের বাইরে অপারেশন করাটা ব্যয়বহুল, আমার জন্য কঠিনও। বোর্ড সহায়তা করলে অনেক উপকার হতো।
এমটি নিউজ২৪/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে