কিশোরগঞ্জ: ভৈরবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মুঠোফোনে ওই স্কুলছাত্রীকে ডেকে নিয়ে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ভেতরে ধর্ষণ করে কথিত প্রেমিক রনি মিয়া (২০)। ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাত সাড়ে দশটার দিকে পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তর পাড়ায় কাশঁফুল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ভেতর এ ঘটনা ঘটে।
ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী শহরের উত্তর ভৈরবপুর এলাকার বাসিন্দা। আর ধর্ষক শহরের পঞ্চবটি এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে প্রেমিক রনি মিয়াসহ তার অপর তিন সহযোগী ইমন মিয়া (২২), নূর মোহাম্মদ (২১) ও আশিক (২০) মিয়ার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ শনিবার দুপুরে মামলার ৪নং আসামী আশিককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে বিচারক তাকে হাজতে পাঠান। মামলা সূত্রে জানা যায়, রনির সঙ্গে স্কুলছাত্রীর সাত মাসের প্রেমের সম্পর্ক। রনির বাবা অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।
স্কুলছাত্রীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলেও ভৈরবপুর উত্তর পাড়া এলাকায় বসবাস করছে। তার মা একজন নির্মাণশ্রমিক। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া স্কুলছাত্রী বাসার কাছেই একটি প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করে। আট মাস আগে রনির সঙ্গে পরিচয় হয় স্কুলছাত্রীর। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেম হয়।
ঈদের পর দিন বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে প্রেমিকাকে বিয়ের কথা বলে নিউটাউন এলাকায় আসতে বলে প্রেমিক রনি। ফোন পেয়ে প্রেমিকা নিউটাউন এলাকার কাশফুল কিন্ডারগার্টেনের কাছে আসলে পাশের একটি রুমে নিয়ে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয় রনি। প্রস্তাবে রাজি না হলে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে প্রেমিক। এ সময় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে সহযোগিতা করে রনির তিন বন্ধু।
তারা হলো- আশিক (২০), ইমন (২২) ও নুর মোহাম্মদ (২১)। তিনজনের বাড়ি শহরের পঞ্চবটি এলাকায়। ধর্ষণের পর স্কুলছাত্রীকে বলা হয় রাতে কাজি অফিস বন্ধ তাই পরদিন বিয়ে করবে। এ কথা বলে স্কুলছাত্রীকে বান্ধবীর বাসায় রেখে পালিয়ে যায় রনি।
এদিকে, মেয়েকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন মা। পরদিন সন্ধ্যায় বান্ধবীর বাসা থেকে মাকে খবর দিলে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। এরপর মেয়ের কাছ থেকে মা সব ঘটনা শুনে শুক্রবার রাতে রনির বাসায় গিয়ে তার মাকে এসব ঘটনা জানান। এ সময় ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে তাদেরকে মারধর করে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয় রনি। পরে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন স্কুলছাত্রীর মা।
ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা বলেন, রনি প্রেমের অভিনয় করে আমার মেয়েকে মোবাইলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। মেয়ের শরীরের জামাকাপড় এখনো রক্তাক্ত। আমি রনির কঠোর বিচার চাই।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক শ্যামল কান্তিনাথ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষিতাকে প্রয়োজনীয় ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।