কিশোরগঞ্জ: সাত বছর বয়সে হা'রিয়ে গিয়েছিল শফিক। হা'রানো সন্তানকে খুঁ'জতে বহু জায়াগায় ঘু'রেছেন বাবা-মা। কিন্তু কোথায় খুঁ'জে পাননি তাদের প্রিয় সন্তানকে। সেই সন্তানের খোঁ'জ পেলেন ১০ বছর পর। ফেসবুকের কল্যাণে ছেলে শফিকুল ইসলামকে খুঁ'জে পেলেন তাঁরা। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের ধুলিহর গ্রামের কৃষক শহীদ মিয়ার বাড়িতে তাই এখন খুশির বন্যা বইছে।
জানা গেছে, ফেসবুকের একটি লাইভ সুযোগ করে দেয় হা'রিয়ে যাওয়া শফিককে বাবা-মায়ের কাছে ফি'রে যেতে। গত ২৫ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরকান ইউনিয়নের শ্রীগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী শেখ জসীম হারানো শফিককে সাথে নিয়ে ফেসবুকে একটি লাই'ভ করেন। সেখানে বিস্তারিত তুলে ধ'রে ছেলেটির প্রকৃত বাবা-মায়ের স'ন্ধা'ন চাওয়া হয়। এ ফেসবুক লাই'ভ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাই'রাল হয়। আর এভাবেই শফিকের খোঁ'জ পান তার বাবা-মা।
নি'খোঁ'জ শফিক গত ১০ বছর শ্রীমঙ্গলের পুরানগাঁওয়ের কাবুল মিয়ার কাছে লা'লিত পা'লিত হচ্ছিল। এখন তার বয়স সতেরো। কাবুল মিয়া ১০ বছর আগে রাজধানী ঢাকার একটি রাস্তা থেকে কু'ড়িয়ে পেয়েছিলেন শফিককে। তিনি এ শিশুটিকে পরম মমতায় কো'লে তুলে নেন। তার কোনো অভিভাবক না পেয়ে নিয়ে যান বাড়িতে। সেখানে কাবুল মিয়ার আট মেয়ে ও দুই ছেলের সঙ্গে সন্তানের মতো বড় হচ্ছিল সে। বিষয়টি ব্যবসায়ী জসীম জানতে পেরে ফেসবুকে তুলে ধ'রেন শফিকের জীবন কা'হিনী।
ফোন ও নানাভাবে যোগাযোগ তৈরির পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে রবিবার বাবা শহীদ মিয়া ও মা সুফিয়া খাতুন শ্রীমঙ্গলের পুরানগাঁওয়ের কাবুল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে হা'জির হন। তারা বু'কে টে'নে নেন প্রিয় সন্তান শফিককে। তখন সেখানে এক আবে'গঘ'ন পরিবেশ তৈরি হয়।
অন্যদিকে শফিককে সন্তানের মতো লালন-পালনকারী কাবুল মিয়ার চোখে জল। এতদিনে যাকে সন্তান স্নেহে বড় করেছিলেন, সে চলে যাবে। কিছুতেই মনকে শান্ত করতে পারছিলেন না তিনি। পুরো পরিবারে নেমে আসে বি'ষা'দের ছা'য়া। কাবুল মিয়া জানালেন, তার মন খারা'প হলেও শফিক তার প্রকৃত বাবা-মাকে ফি'রে পেয়েছে এতেই তিনি খুশি হয়েছেন। নিজের সন্তান না হলেও সে আমার সন্তানতুল্য। এটা আমার জীবনের একটা স্ম'রণী'য় ঘটনা হয়ে থাকবে। তার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ থাকবে। ওর জন্য আরো কিছু যদি করতে হয়, আমি করব।
পরিবারের সদস্যরা জানান, শিশু শফিককের বয়স তখন মাত্র ৭ বছর। ওই সময়ে কোনো একদিন বাড়ি থেকে বে'র হয় শফিক। ঢাকাগামী গাড়িতে উঠে ঘুমিয়ে পড়ে। অচে'না ঢাকা শহরে গিয়ে বি'প'দে পড়ে শিশুটি। নিজের গ্রামের ঠিকানা এমনকি বাবা-মায়ের নামও বলতে পারত না সে। রাস্তার পাশে কা'ন্নার'ত শিশুটিকে দেখতে পান শ্রীমঙ্গলের ব্যবসায়ী কাবুল মিয়া। অভিভাবকের খোঁ'জ না পেয়ে বাড়িতে নিয়ে যান শিশুটিকে। সেখানে নিজের সন্তানের মতোই লা'লন-পা'লন করতে থাকেন তাকে। তাঁর অন্য আট মেয়ে ও দুই ছেলের সঙ্গেই বেড়ে ওঠে সে। কাবুল মিয়া জানান, পরে তিনি আরো অনেক দিন শিশুটির বাবা-মায়ের খোঁ'জ করেছিলেন। কিন্তু খোঁ'জ পাননি।
পালক বাবা কাবুল মিয়া জানান, অস'হা'য় শিশুটিকে রাস্তায় ফে'লে আসতে বিবে'কে বেঁ'ধেছিল। তাই তাকে নিজের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার তাৎ'ক্ষ'ণিক সিদ্ধা'ন্ত নিয়েছিলেন তিনি।
শফিকের বাবা শহীদ মিয়া ও মা সুফিয়া খাতুন বলেন, আজ নিজের হা'রিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফি'রে পেয়েছি। যে ক'ষ্ট এতদিন বু'কে বিঁ'ধে ছিল তা দূ'র হয়েছে। তারা তখন কাবুল মিয়ার প্রতি কৃত'জ্ঞতা প্রকা'শ করে বলেন, উনি আমাদের চিরদিনের মতো আ'ত্মা'র আত্মীয় হয়ে গেলেন।