কিশোরগঞ্জ থেকে: ছোট বেলা থেকেই কুকুরের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভার চন্ডিবের কামাল সরকার বাড়ির সন্তান ফোসহাত রাব্বী স্বজলের। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ঢাকার গুলশানে। পড়াশোনা করেছেন ক্যান্টনমেন্টের শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুকুর লালন-পালনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চতর ডিগ্রি শেষে গ্রামে ফিরেই গড়ে তুলেন কুকুরের খামার। বর্তমানে খামারে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ৪০টি কুকুর। যেখান থেকে প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫টি কুকুর উৎপাদিত হচ্ছে।
এসব কুকুর অফলাইন কিংবা অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এ খামার থেকে বছরে তার গড় আয় হচ্ছে ১৮ লাখ টাকা। জানা গেছে, একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তর করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখান থেকে ফিরে গ্রামের বাড়ি গড়ে তুলেন কুকুরের খামার।
এ খামারে দেশি সরাইল, জার্মান শেফার্ড, ডোবারম্যান, কাউকেশান শেপার্ড, সাইবেরিয়ান হাস্কি, ফ্রেন্স মাস্তিফ, গ্রেড ডান, বাল মাস্তিফ, সেইন্ট বেনার্ড, ক্যান কর্স, ব্রিটিশ বুলডগ ইত্যাদি প্রজাতির কুকুর রয়েছে।
ফোসহাত রাব্বী স্বজল জানান, ছোট বয়স থেকে কুকুরপ্রীতি থাকলেও একদিন পেশায় রূপ নেবে তা কখনো ভাবতেন না। তিনি জন্মের পর থেকেই তাদের পরিবারে কুকুরের লালন-পালন দেখেছেন। তাদের ঢাকার বাসায় দেশী-বিদেশি প্রজাতির তিন-চারটি কুকুর সব সময়ই থাকতো। ফলে শিশুকাল থেকেই কুকুরের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
তিনি বলেন, আমার নানা আব্দুল জলিল যখন বিদেশে পাট বিক্রি করতে যেতেন, তখন বিদেশি কুকুর কিনে আনতেন। তখনকার সময়ে সেসব কুকুর বাসার পাহারাদার হিসেবে কাজ করতো। অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা শেষ করে যখন দেশে ফিরে আসি তখন আমি নিজের ঢাকার বাসায় বিদেশি জাতের বিভিন্ন ধরনের কুকুর সংগ্রহ করি।
রাব্বী বলেন, সেসব কুকুর লালন-পালন করে বাচ্চা উৎপাদন করতে থাকি। তখন থেকেই ভাবতাম আমি যদি বাণিজ্যিকভাবে কুকুরের খামার গড়ে তুলি তাহলে দেশের মানুষ সহজেই আমার কাছ থেকে বিদেশি কুকুর নিতে পারবে। সেই থেকে ভৈরবে কুকুরের খামার গড়ে তুলি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিরিনা খাতুন বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী খামার। রাব্বী ছোট থেকেই কুকুরপ্রীতি ছিলেন। ভৈরবে একটি ব্যতিক্রমী কুকুরের খামার গড়ে তুলেছেন। এখন খামারটি বেশ লাভজনক। আমরা তাকে সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছি।