উবায়েদ রনি, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: ১৯১৬ সালের জানুয়ারীতে প্রতিষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্কুল অজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি অ্যাড. আবদুল হামিদ এ অনুষ্ঠানে সকলকে প্রেরণা দিতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। তার আগমন উপলক্ষ্যে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়কে বর্ন্যঢ্যভাবে সাজানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক জি এস এম জাফরউল্লাহ জানান, মহামান্যকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তোরণ নির্মান করা হয়েছে ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে ।
শতবর্ষের আমেজ ছড়িয়ে পরেছে শহরের সর্বত্র। দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও শিক্ষকদের তিনদিনের এ উৎসবে যোগদান করার জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়েছে।
শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি ও বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভণর মো. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠানে অর্থপ্রতিমন্ত্রীসহ সচিবগণ ও রাজনৈতিকদলের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিবর্গ ও বিদ্যালয়ের দেশ বিদেশের সাবেক আলোকিত শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে স্মৃতিচারণমূলক ডকুমেন্টরী প্রদর্শন, গীতি আলেখ্য “শিখা অর্নিবান” মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক “নৃত্যনাট্য” শিল্পী কনকচাঁপার একক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় শিল্পীদের একক সংগীতানুষ্ঠান ও স্মৃতিচারণমূলক আড্ডা, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে “গানে গানে প্রানের আনন্দ মেলা” গীতিনাট্য “মহুয়া”, সুবীর নন্দীর একক সংগীতানুষ্ঠান ও নায়ক সায়মন সাদিকের একক অনুষ্ঠান।
তৃতীয় দিনে রয়েছে একক সংগীতানুষ্ঠান ও স্মৃতিচারণমূলক আড্ডা, কৌতুক, সংগীত, বিশেষ আকর্ষনীয় গীতিনাট্য “কমলাসুন্দরী” ও র্যাফেল ড্র।
বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার সাতারপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও দানবীর মুন্সি আজিমউদ্দিন আহমদ পিছিয়েথাকা এ এলাকার মানুষদেও শিক্ষার আলো জ্বালাতে ১৯১৬ সালে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯১৬ সালের ২৮ শে জানুয়ারী কিশোরগঞ্জের ষ্টেশন রোড সংলগ্ন বাড়িতে একটি টিনের ঘরে ৩য় থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র ভর্তি করানোর মাধ্যমে স্কুল পরিচালনা শুরু হয়। পরবর্তীতে রেললাইনের পাশে বর্তমান স্কুল যেখানে অবস্থিত সেখানে জায়গা ক্রয় করে স্কুল কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। হাটি হাটি পা করে এ বছর শত বছরে পা রাখল এ ঐতিয্যবাহী স্কুল। হীরণ চন্দ্র গোস্বামী ছিলেন এ স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক। ১৯২২ সালে রেবতী মোহণ বর্মন মেট্রিক পরিক্ষায় মেধা তালিকায় ১ম স্থান অর্জন করায় সমগ্র বাংলা, বিহার ও কলকাতা জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এর ফলে দেশ ও বিদেশে এ স্কুলের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রথম উপচার্য্য ড. এম ওসমান গণি, প্রখ্যাত নাট্যকার ও অভিনেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিপল্বী রেবতী মোহন বর্মন ছিলেন এ বিদ্যারয়ের ছাত্র ছিলেন।
২৪ জানুয়ারি, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস