মো. উবায়েদ রনি, কিশোরগঞ্জ থেকে : স্থানীয় দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে বক্তব্যের একপর্যায়ে রসিকতা করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, আমি প্রথমে স্পিকার এবং পরে রাষ্ট্রপতি হতে সক্ষম হলেও কখনো মন্ত্রী হতে পারলাম না। তাই আমার কোনো ক্ষমতা নেই। আমাকে শুধু মন্ত্রীদের অনুরোধ করে যেতে হয়।
রোববার বিকেলে কিশোরগঞ্জে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর কিশোরগঞ্জের সন্তান রাষ্ট্রপতি প্রথমে ডেপুটি স্পিকার এবং ২০০৯ সালে স্পিকার নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের মার্চে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করা রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জ থেকে সাতবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
‘দূরের মানুষ কাছে আসো, যদি আমার গান শুনতে চাও’ এ গানের কলি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মঞ্চের চারপাশ ঘিরে যেভাবে বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে তাতে দূরের মানুষ কাছে আসা তো দূরের কথা, উল্টো কাছের মানুষ দূরে চলে যায়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের স্বপ্ন এবং স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছে থাকতে হবে। এ স্বপ্ন পূরণে থাকতে হবে শিক্ষার পাশাপাশি অধ্যবসায়, চর্চা ও প্রচেষ্টা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, আমরা এখন একবিংশ শতাব্দীতে বাস করছি। বিশ্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক ও চ্যালেঞ্জিং। এ চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে ও দক্ষতায় হতে হবে বিশ্বমানের।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে করে তিনি বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণই হবে তোমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কোনো ধরনের লোভ-লালসা ও হীন স্বার্থ চরিতার্থের মনবৃত্তি যেন তোমাদের কোমল মনকে কলুষিত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের অর্থে দেশ ও জনগণের কাছে আমরা প্রত্যেকেই দায়বদ্ধ। ছাত্র-ছাত্রীদের সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
উপবৃত্তি ও বিনামূল্যে বই বিতরণের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, শিক্ষার প্রসার ও মান উন্নয়নে সরকার আন্তরিক ও সচেষ্ট রয়েছে।
কিশোরগঞ্জে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন জানিয়ে অবিলম্বে এর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন রাষ্ট্রপতি।
আজিম উদ্দিন হাইস্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিকে সরকারিকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এবং সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন, আফজাল হোসেন ও রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক প্রমুখ।
এর আগে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে আজ সকালে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সমাবেশস্থলে এসে শেষ হয়।
২৪ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম