মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪, ০৩:২১:৫৯

১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি!

১০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রমজান মাস এলেই ব্যবসায়ীরা যেখানে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকেন সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নজির স্থাপন করেছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী।

এলাকায় তিনি শিল্পপতি এরশাদ উদ্দিন নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকায় মানবিক সেবামূলক কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল-কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানও।

এরশাদ উদ্দিন জানান, রমজান মাসের প্রথম দিন থেকে ১০ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রির এ কাজ চলমান থাকবে শেষ দিন পর্যন্ত।  যে কেউ খামার থেকে মাত্র ১০ টাকা লিটার দরে সর্বোচ্চ ১ লিটার দুধ কিনতে পারবেন।
এ উদ্যোগের জন্য জন্য এলাকায়ও প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তিনি।  

মো. এরশাদ উদ্দিন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর রৌহা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য।

এরশাদ উদ্দিন জানান, রমজান আসলেই এলাকায় দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। হাট-বাজারগুলোতে এক কেজি দুধ ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১২০ টাকা দামে নিম্নবিত্ত মানুষ ক্রয় করে খাওয়ার ক্ষমতা নেই। এ বিষয়টা চিন্তা করেই তাদের জন্য নামমাত্র ১০ টাকা মূল্যে ৭০ জনকে ১ লিটার করে দুধ দেওয়ার এ পরিকল্পনা।  এমনও লোকজন আছে যাদের বিনামূল্যে দুধ দেওয়া হয়। আজ প্রথম রমজান থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত।

তিনি আরও বলেন, পুরো রমজানে আমার খামারে যা দুধ উৎপাদন হবে সবই ১০ টাকা করে বিক্রি করা হবে। সেই সিবে এ রমজানে ২ মেট্রিক টন দুধ ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করা হবে। সে হিসেবে দৈনিক ৭০ থেকে ৭৫ জন ১০ টাকা দরে দুধ কিনতে পারবেন। মঙ্গলবার

নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দেওপুর আব্দুল মান্নান বলেন, বাজারে সব কিছুরই মূল্য অনেক। রমজানে ১২০ টাকা লিটার করে দুধ কিনে খাওয়া আমাদের সম্ভব না। এরশাদ ভাই ১০ টাকা করে দুধ দিতেছে এই দুধ দিয়েই আমরা সেহরি খাব। আমাদের সকল বিপদেই এরশাদ ভাই পাশে থাকেন।

বয়রা মধ্যপাড়া গ্রামের মার্জিয়া ও হাফসা খাতুন বলেন, আজ রমজানের শুরু দিন। এই প্রথম দিন থেকেই এরশাদ সাহেব আমাদকে ১০ টাকা দরে এক লিটার দুধ দিয়েছেন। প্রতিদিনই ১ লিটার দুধ দিবেন ১০ টাকায়। আমরা অনেক খুশি কারণ আমাদের মতো গরীব মানুষের ১২০টাকা লিটার করে বাজার থেকে দুধ কিনে খাওয়া সম্ভব না।
 
মোহাম্মদ ইমরান বলেন, এরশাদ ভাইয়ের এ মানবিক উদ্যোগ আমাদের উপজেলায় প্রশংসিত হয়েছে। তিনি এবছর নিয়ে তিন বছর ধরে রমজানে ১০ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করে আসছেন। ১০ টাকা হলো নাম মাত্র মূল্য। কারণ বিনামূল্যে দিলে অনেকেই লজ্জায় নিতে চাইবেন না তাই ১ লিটার দুধ মাত্র ১০ টাকা মূল্য রাখছেন। তিনি সব সময়ই এমন মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন।

তিন বছর আগে এরশাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় জে সি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণের তিন শতাধিক গরু রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২০টি গরু দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন খামার থেকে ৭০-৭৫ লিটার দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। সেই সব দুধ তিনি ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে কেউ তার খামার থেকে নাম মাত্র ১০ টাকা লিটার দরে সর্বোচ্চ এক লিটার দুধ কিনতে পারবেন। বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা গেছে তার খামারে এলাকার দরিদ্র শতেক নারী পুরুষ লাইন ধরেছেন। তারা ১০ টাকা আবার অনেকেই বিনামূল্যে দুধ নিয়েছেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে