সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫, ১০:৪৫:৫৩

‘খালটির পানি যতই বৃদ্ধি পায়, ততই নাকি কবরটি ভেসে ওঠে’!

‘খালটির পানি যতই বৃদ্ধি পায়, ততই নাকি কবরটি ভেসে ওঠে’!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রহস্যময় একটি কবরের সন্ধ্যান মিলেছে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। বিভিন্ন সময় জোয়ারে আশাপাশের সবগুলো কবর পানিতে মিলিয়ে গেলেও ৪০ বছর ধরে খালে ভাসছে কবরটি। এ কবরটিকে ঘিরে কিছু প্রবাদ কথা আছে- ‘খালটির পানি যতই বৃদ্ধি পায়, ততই নাকি কবরটি ভেসে ওঠে।’ কিন্তু বাস্তবতা হলো কবরটি কখনই পানিতে তলিয়ে যায়নি।

রহস্যেঘেরা কবরটি উপজেলার ছিট রাজিব সরকারপাড়া গ্রামের তিস্তা প্রধান সেচ খালে অবস্থিত। যার কবর ঘিরে এলাকাবাসীর মনে এত প্রশ্ন জন্ম হয়েছে, তিনি ছিলেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা দেবার উদ্দীন হাজী। ওই এলাকায় দানশীল ও ধার্মিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই ব্যক্তি।

স্থানীয়ভাবে প্রচলিত আছে, শতবছর আগে পায়ে হেঁটে হজ্ব করেছিলেন। যাওয়ার আগে প্রায় ৮৪ একর জমি দান করে গেছেন। হজ্ব থেকে আসার পর দেবার হাজীর মৃত্যু হয়। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থনে দাফন করা হয়। ওই কবরস্থানে আরও কবর ছিল।

১৯৮৪ সালে ক্যানেল (তিস্তা প্রধান সেচ খাল) খননের জন্য কবরস্থানটি অধিগ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কাজ চলাকালে সবকটি কবর সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। তবে ওই কবরটি সরাতে গেলে ড্রেজার মেশিন নষ্ট হয় বলে দাবি করেন অনেকেই। পরে বাধ্য হয়ে কবরটি অক্ষত রেখেই শেষ করা হয় খননকাজ। রহস্যেঘেরা দেবার হাজির এ কবরটিকে ঘিরে কৌতূহলের শেষ নেই মানুষের।

প্রচলিত আছে, ক্যানেলের পানি বাড়লে ভেসে ওঠে কবরটি। কৌতূহলী মানুষ ছুটে আসেন রহস্যজনক এ কবরটি এক নজর দেখতে। যার কবরকে ঘিরে এত রহস্য, এত আলোচনা সেই দেবার হাজি সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য জানা যায়নি এলাকা ঘুরে।

দেবার উদ্দিন হাজীর নাতি আমিনুর জানান, ছোট বেলা থেকে শুনে এসেছি কবরটির কথা। কোনোদিনও আমরা কবরটি পানিতে তলিয়ে যেতে দেখিনি। আমার দাদার কবরের সঙ্গে অনেক কবর ছিল, সেসব কবরের মাটি ড্রোজার মেশিন দিয়ে সরাতে পারলেও আমার দাদার কবরের মাটি সরাতে পারেনি। কবরটি এখনও অক্ষত রয়েছে।

কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সোহারওয়াদী বলেন, কবরটি দেবার হাজী নামে একজন ধার্মিক ও দানশীন ব্যক্তির। তিস্তা প্রধান খাল খননের সময় সেটি সরাতে গেলে মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। শতবর্ষী এই কবরটি সেই থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে পানিতে ভাসছে। এটি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে অনেক কৌতুহল রয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে