এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জিয়াউর রহমান সরকারের স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী (১৯৭৮-১৯৮২ মেয়াদ) ডা. ফজলুর করিমের ছেলে সদ্য সাবেক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বুধবার বিকাল থেকে এমন একটি খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকহারে প্রচার করছেন।
বিষয়টি স্বীকার করেছেন ফয়জুল করিমও। তিনি বুধবার বিকালে ‘অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন। ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড কথা বলেন। ওই পেজের প্রোফাইল পিকচারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লেখাসহ দলীয় পতাকা দেওয়া আছে। এছাড়া ওই পেজের ব্যানারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার ছবিসহ রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
জানা গেছে, নিজের নামে এ ফেসবুক পেজটি অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন নিজেই পরিচালনা করেন।
লাইভে এসে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী নেতা অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেহেতু বলেছেন, তিনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। আমি রাজনীতি করেছি দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। এখন মনে করছি, দেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার প্রয়োজন।’
লাইভে মুবিন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, তিনি এই দেশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এখন ঐক্যের সময়।’
এর আগে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ওই ফেসবুক পেজ থেকেই লাইভে এসে ফয়জুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার পক্ষে আমি অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন, কিশোরগঞ্জ থেকে ইংরেজি ২১ অক্টোবর অসাংবিধানিক সরকার কর্তৃক জুলাই সনদের তীব্র বিরোধিতা করি।’
অ্যাডভোকেট ফয়জুল কবীর মুবিন দীর্ঘদিন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি জেলা বিএনপির উপ-দপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে আগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
গত ৫ অক্টোবর মুবিন ফেসবুকে পোস্ট করে বিএনপি থেকে পদত্যাগের কথা জানান।
চরম দুঃসময়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগে কেন যোগ দিলেন–এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল, ধর্মনিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। ৫ আগস্টের পর মানুষের যে স্বপ্ন ছিল, চেতনা ছিল, এক বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের নামে সম্পদ ভোগ করার চেষ্টা চলছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা চলছে। তাকে প্রতিহত করার জন্যই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। শেখ হাসিনাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল। আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’
তবে কী পদ্ধতিতে কিংবা কার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি।
এ নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিএনপিতে এখন মুবিনের কোনো পদ নেই। এছাড়া তার মাথাও ঠিক নেই। কাজেই তার আওয়ামী লীগে যোগদানেরও কোনো গুরুত্ব নেই।’