মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই, ২০১৬, ১০:৪৫:৩৭

উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুুত শোলাকিয়া

উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুুত শোলাকিয়া

উবায়েদ রনি, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাত প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায়। হিসাব অনুয়ায়ী এবারের  জামাতটি হবে ১৮৯ তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাত। ইতিমধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আইন শৃংখলা বাহীনীও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত দাদ খাঁন কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর ১৮২৮ সালে ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন।

জন¯শ্রুতি রয়েছে, শোলাকিয়া মাঠের প্রথম জামাতটিতে সোয়ালাখ মুসুল্লি অংশগ্রহণ করার কারণে এ মাঠের নাম
“সোয়া লাখি মাঠ” নামে ডাকা শুরু হয়, সময়ের বিবর্তনে এ মাঠেন নাম বর্তমানে শোলাকিয়ার ঈদগাহ মাঠ নামেই সমাধিক পরিচিত।
 

এ মাঠে ২৬৫ টি কাতার রয়েছে যার প্রতি কাতারে আনুমানিক ৫ শতাধিক মুসুল্লি নামাজে অংশগ্রহণ করে থাকেন এছাড়াও মাঠের বাহিরে, নদীর পাড় ও আশেপাশের বিরাট এলাকাজুড়ে মাঠে অনুষ্ঠিত জামাতের চাইতেও বেশি মুসুল্লি এ জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও মাঠের পশ্চিমপাশে রয়েছে ইচ্ছাগঞ্জ/শোলাকিয়া গরুর হাট আর এতে বসা ঈদ মেলাটিও দৃষ্টিনন্দন। এ মেলায় বাঁশ, বেতের নানাবিধ সরঞ্জামসহ গৃহস্থালির নানান পসরা সাজায় দোকানিরা, যা নামাজের পর মুসুল্লিদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়।

এ মাঠের সুনাম ও জনশ্রুতির দরুন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন এ জামাতে এসে শরীক হয়, বিভিন্ন দেশের মুসুল্লিরা এশিয়ার সর্ববৃহৎ এ জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন।

এবারের ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০ টায়। ঈদুল-ফিতরের জামাতে ঈমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ।  বিপুল সংখ্যক মুসুল্লি হওয়ায় দৃষ্টি আকর্ষণের সুবিধার্থে  নামাজের ৫ মিনিট পূর্ব থেকে শটগানের গুলি ফোটানো হবে।

মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে “শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল” নামে দুটি ট্রেনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। একটি ট্রেন ভোর ৫ টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেনটি ভোর ৬ টায়  ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসার কথা রয়েছে।

ঈদগাহ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক জনাব আজিমুদ্দিন বিস্বাস সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, মুসুল্লিগন যেন নিরাপদে ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন তার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।  সুষ্ঠভাবে এ জামাত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে একাধিকবার মাঠ পরিদর্শনসহ বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে মাঠের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ণের কার্যক্রম চলছে।

ঈদগাহ কমিটির সহ-সভাপতি পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আনোয়ার হোসেন খান জানান, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ জামাতকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহীনী থাকবে। মাঠের প্রতিটি প্রবেশপথে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার রাখা হব।  
৫ জুলাই ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে