শুক্রবার, ০৮ জুলাই, ২০১৬, ১০:২৮:৫০

শোলাকিয়া হামলা, ছেলেকে ঈদের পোশাক বের করে দিতে গিয়ে গুলিতে মৃত্যু হয় মায়ের

শোলাকিয়া হামলা, ছেলেকে ঈদের পোশাক বের করে দিতে গিয়ে গুলিতে মৃত্যু হয় মায়ের

নিউজ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জে শোলাকিয়ার ঈদগাহ্‌ ময়দানের কাছে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন সাধারণ মহিলা। ঝরনারানি ভৌমিক নামের ওই নারী ঈদের দিন বাড়িতে সেমাই রান্না করেছিলেন। রুটি বানাবেন বলে ময়দা মাখছিলেন। ছেলের জন্য ঈদের পোশাক বার করে দেবেন বলে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন শোয়ার ঘরে।

ঠিক সেই সময়েই খোলা জানলা দিয়ে গুলি এসে লাগে ঝরনার মাথায়। ঘরের ভিতরেই পড়ে যান তিনি। ‘ঘটনাচক্রে’ সন্ত্রাসের শিকার!

এর সাতদিন আগে রাজধানী ঢাকার গুলশনের রেস্তোরাঁয় ঘটে যাওয়া আরেকটি সন্ত্রাসের ভয়াবহ স্মৃতি। স্থানীয় পুলিশকে উদ্ধৃত করে ভারেতর সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সে সময়ে ময়দানে নমাজ চলছিল। ছিলেন প্রায় দু’লক্ষ মানুষ।
গত শুক্রবারের সন্ত্রাসের পর থেকেই বাংলাদেশের সর্বত্র বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। শোলাকিয়ার ওই ময়দানের প্রবেশপথের ঠিক পাশেই আজিমুদ্দিন স্কুল। সেই স্কুলের সামনেই আজ তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তখনই সাত-আটজন ধারাল অস্ত্র নিয়ে পুলিশকর্মীদের উপরে চড়াও হয়। পুলিশ ঠেকানোর চেষ্টা করতেই জঙ্গিরা কয়েকটি বোমা ছোড়ে। তার পরেই শুরু হয় দু’পক্ষের গুলিবর্ষণ। সেইসময় পাশের একটি বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঝরনার মৃত্যু হয়। জহিরুল হক (৩৫) নামে এক কনস্টেবল জঙ্গিদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে প্রাণ হারান আনসারউল্লাহ নামে আরেক পুলিশকর্মী।

ঘটনার পরে কিশোরগঞ্জের এএসপি আবু সায়েম বলেন, সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের আরেকজন পুলিশকর্তা ওবাইদুল হাসান জানিয়েছেন, বিস্ফোরণ এবং গুলির শব্দে ভিড়ে ঠাসা ময়দানে আতঙ্ক ছড়ালেও নমাজ সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে।

শোলাকিয়ার সবুজবাগ মহল্লার ভৌমিক বাড়ি। ঝরনার ছেলে বাসুদেব ঢাকার একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসেছেন।

বাড়ির রান্নাঘরে পড়ে থাকা সেমাইয়ের বাটি আর ময়দার গোলা দেখিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, কেমন করে বিশ্বাস করব, মা আর নেই! মায়ের ঘরটা তো মায়েরই রক্তে ভেসে গেল।

ঝরনার দেওর উপেন্দ্র জানিয়েছেন, ঈদে বেরোবে বলে মা’কে নতুন পোশাক বার করে দিতে বলেছিলেন ঝরনার আরেক ছেলে। রুটি করার ফাঁকে সেই জন্যেই রান্নাঘর থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। তখনই জানলার বাইরে থেকে ছোড়া গুলি লাগে তাঁর মাথায়। পরিবারের অন্যেরা তখন ওই ঘরেরই মেঝেয় শুয়েছিলেন। আচমকা ঝরনাকে পড়ে যেতে দেখে প্রথমে কেউ বুঝতেই পারেননি কী হয়েছে! পরমুহূর্তেই দেখেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়েছে সন্ত্রাস! -এবেলা
০৮ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে