কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের আগে পুলিশের ওপর হামলার সময় গুলি ও চাপাতির পাশাপাশি ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসও (আইইডি) ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা।
এ কথা বলে জানিয়েছেন র্যাবের কর্মকর্তারা। তারা জানান, এই ডিভাইস গত শুক্রবার রাজধানীর গুলশান হামলায়ও ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা।
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার পরপরই ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশ ও র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা। র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে জানান, হামলায় জঙ্গিরা চাপাতি ও গুলির পাশাপাশি হাতে তৈরি এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আইইডি ব্যবহার করে, যা এর আগেও বিভিন্নস্থানে ব্যবহার করেছিল তারা।
অভিযান শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর জানিয়েছিল, গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলার সময় আইইডি ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা। গত বছর রাজধানীর ইমামবাড়ায় শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের পূর্ব মুহূর্তে হাতে তৈরি গ্রেনেড ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা।
শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনায় জেএমবির জঙ্গিরা জড়িত উল্লেখ করে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম সাংবাদিকদের জানান, সন্দেহভাজন হামলাকারীদের মধ্যে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় র্যাবের হাতে ধরা পড়েছে শফিউল ইসলাম ওরফে আবু মোকাদ্দেল নামে আরো একজন।
র্যাব-১৪-এর মেজর সাইফুল সাজ্জাদ জানান, শোলাকিয়ার ঘটনার পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক শাফিউলের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র সে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে সে জানিয়েছে, ওস্তাদের নির্দেশে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দিনাজপুর থেকে শোলাকিয়ায় আসে। সেই অ্যাসাইনমেন্ট কি ছিল তা এখনো জানা যায়নি। এ কথাও সে বলেছে, তার সঙ্গে থাকা অন্য জঙ্গিদের আগে থেকে চিনত না।
জঙ্গিদের সেই ওস্তাদের সন্ধানে মাঠে নেমেছে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের পাশে জঙ্গিদের বোমা হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাসহ আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে।
শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেন।
বৃহস্পতিবার জঙ্গিদের হামলায় আহতরা হলেন হোসেনপুর উপজেলার হুগলাকান্দি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হৃদয় (১৮), শহরের হারুয়া এলাকায় মাহতাব উদ্দিনের ছেলে মোতাহার (২২), টেংরা বাজারের অটোরিকশাচালক আবদুর রহিম (৪০)।
অন্যদিকে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আহতরা হলেন উপ-পরিদর্শক নয়ন মিয়া (৩০), কনস্টেবল জুয়েল (৩৫), রফিকুল (৩০), তুষার আহম্মদ (৩০), প্রশান্ত (৩২), মতিউর (৩২) ও এমদাদুল হক (২৫)।
তারা বর্তমানে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গতকালই তাদের একটি হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
বাকিদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য ও একজন পথচারী রয়েছেন। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত চারজনের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন।
৮ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম