কিশোরগঞ্জ: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলাকারীরা একই জঙ্গি সংগঠনের বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, উভয় হামলায় জেএমবির সদস্যরা জড়িত।
শনিবার দুপুরে শোলাকিয়ার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আইজিপি একেএম শহিদুল হক বলেন, হামলাকারীরা জেএমবির সদস্য। তবে এ ঘটনার সঙ্গে আইএস জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ সময় দেশে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অস্তিত্ব নেই বলে আবার দাবি করেন পুলিশ প্রধান। তিনি বলেন, ‘গুলশানে যারা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের সদস্যরাই শোলাকিয়ায় হামলার সঙ্গে জড়িত। তারা আইএসের সদস্য নয়।’
গুলশানে জঙ্গি হামলার এক সপ্তাহ না কাটতেই বৃহস্পতিবার ফের বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে কিশোরগঞ্জ। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের মাঠের কাছে শোলাকিয়ায় এ হামলা চালায় জঙ্গিরা।
পরে জঙ্গিদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোলাগুলিতে দুই পুলিশ সদস্য, হামলাকারী জঙ্গি ও এক নারী নিহত হন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চিকিৎসার জন্য তাদের ময়মনসিংহ ও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন : এসআই নয়ন মিয়া এবং কনস্টেবল জুয়েল, রফিকুল, প্রশান্ত, তুষার, মশিউর ও আসাদুল।
শোলাকিয়া মাঠের আড়াইশ মিটারের মধ্যে আজিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটকের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঈদের সকালে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনায় শোলাকিয়া মাঠের জামাতে অংশ নিতে জড়ো হওয়া লাখো মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়।
ওইদিন সকাল ৯টার দিকে শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে ইমামতি করতে স্থানীয় সার্কিট হাউসে পৌঁছান আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদ। ঈদগাহে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময়ই তার কাছে বোমাহামলঅর খবর আসে। এ কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।
পরে প্রধান ইমামের অনুপস্থিতিতে স্থানীয় জামিয়া ইমদাদিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা শোয়াইব ঈদের জামাতে ইমামতি করেন। অনেকে ধারণা করছেন, আল্লামা মাসঊদকে মারাই ছিল হামলাকারীদের উদ্দেশ্য।
শোলাকিয়ার হামলার পর আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদও বাংলামেইলকে বলেছিলেন, ‘হামলাকারীরা আইএসের সদস্য নয়। তারা স্থানীয়।’
১ জুলাই গুলশানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় বহু হতাহতের পর এবার প্রধান সব ঈদ জামাতেই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এর ভেতরেই দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতে ফের হামলা চালায় জঙ্গিরা।
০৯ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম