রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬, ০৩:৩২:৫৩

জঙ্গি হামলার পর আইজিপি হেফাজতকে ফোন করেছিলেন

জঙ্গি হামলার পর আইজিপি হেফাজতকে ফোন করেছিলেন

কিশোরগঞ্জ থেকে : ১ জুলাই শুকবার গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টে এবং ঈদ জামাতের সময় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের মাসে জঙ্গি হামলার পরই হেফাজত ইসলামকে ফোন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি একেএম শহীদুল হক। আর এ বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন আইজিপি।

শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সুধী সমাবেশে আইজিপি এসব কথা জানান। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি।

জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় আলেম ওলামাদের বিশেষ ভূমিকা রাখার করা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেবকে (হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব) ফোন করলাম। উনাকে বললাম গুলশানে এতো বড় ঘটনা ঘটলো, কিশোরগঞ্জে ঈদগাহর কাছে হামলা হলো; আপনারা নীরব কেনো? এই জঙ্গিরা যে কাজ করছে এটা কি ইসলামের পক্ষে? জঙ্গিবাদকে কি ইসলাম সাপোর্ট করে?’

তিনি বলেন, ‘ইসলাম শেষ করে ফেললো বলে ঢালাও অভিযোগ করতে পারেন সরকরের বিরুদ্ধে। ইসলাম রক্ষার, ইসলাম হেফাজত করার দায়িত্ব নিয়েছেন (হেফাজতে ইসলাম)। কিন্তু এখন কোনো কথা বলছেন না। যদি আপনারা নীরব থাকেন, মৌন থাকেন, তাহলে প্রমাণ হবে আপনারা জঙ্গিবাদকে সমর্থন করেন।’  

বিশেষ কিছু ধর্মীয় নেতারাই তরুণদের মগজ ধোলাই করছেন উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘জঙ্গিরা উত্তরবঙ্গে, কুষ্টিয়া, পাবনাসহ সারাদেশে যতো ঘটনা ঘটিয়েছে, তার মধ্যে প্রায় নব্বই ভাগ ঘটনাই উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। এসব ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে, অস্ত্র, বোমা উদ্ধার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে যেসব তথ্য পেয়েছি, তাতে সুকৌশলে ওইসব তরুণের মগজ ধোলাই করা হয়।’

একেএম শহীদুল হক আরো করে বলেন, ‘প্রথমে তরুণ-যুবকদের টার্গেট করা হয়। এরপর তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে পরবর্তীতে কোরআনের আয়াতসহ কিছু বই-পুস্তক দেয়া হয়। সবশেষে স্পেশাল ধর্মীয় নেতাদের কাছে রেখে তাদের মোটিভেট করা হয়। নেতারা বুঝায় যে, এই পথটাই একমাত্র পথ, যেখানে সহজেই বেহেশতে যাওয়া যায়। এইভাবেই মগজ ধোলাই করে তরুণদের জঙ্গি পথে ধাবিত করা হচ্ছে।’

কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের আয়োজনে সুধী সমাবেশে অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘পরিবারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সন্তান কোথায় যায়, কী করে, আচার-আচরণে কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ছে কি না, সব বিষয়ে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে পুলিশের সহযোগিতা নিন। না হলে, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে না।’

ধর্মের নামে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘এরা ইসলামের শত্রু, মানবতার শত্রু।’

১০ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে