নিউজ ডেস্ক : তনু হারিয়ে পাগলপ্রায় তার বাবা-মা। আদরের সন্তানটির শূন্যতায় ভুগছেন তারা। তনুশূন্য বাড়িটা যেন একেবারে খালি। বাবা-মার বুকফাটা আর্তনাদে যেন বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। শুধু বাড়ি নয় সেই গ্রামজুড়ে এখন চলছে শোকের মাতম। সেই কবরস্থানের পাশ দিয়ে গেলে যেন বুকটা ফেটে যায় গ্রামবাসীর, যেখানে ঘুমিয়ে আছে তনু। তনুর হত্যাকাণ্ডের খবরে বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিতে আসেন তনুর এক বান্ধবী। তাকে কাছে পেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলেন মা।
সোহাগী জাহান তনুদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের মির্জাপুরে। তনুশূন্য সেই গ্রামটি এখন নীরব-নিস্তব্ধ।
বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মনসুর উদ্দিন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী তনুর কবর জিয়ারত করে পরিবারকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেন।
ইউএনওকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরে বুকফাটা আর্তনাদ শুরু করেন তনুর বাবা-মা ও স্বজনরা। এসময় তারাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, বাবা আমার জেঠি আদর করে তার নাম রেখেছিল সোহাগী। তাকে সবাই আদর করতো। আমি আমার মাকে বলতাম, মা তোরে আমি বুকের মধ্যে আটকে রাখতে চাই। মেয়েটাকে কাছে পেলে বুকে টেনে নিতাম। সে বলতো বাবা, আমি তো বড় হয়েছি। তুমি কি পারবে আমাকে সবসময় বুকে রাখতে।
তনু হত্যার বিচার দাবিতে আজ রাজপথের পাশাপাশি ফেসবুকেও ঝড় বইছে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস বিভাগের (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী ও ভিক্টোরিয়া কলেজ অথুনা থিয়েটারের সদস্য সোহাগী জাহান তনু গত রোববার সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ানোর জন্য বের হন।
রাত গড়িয়ে গেলেও বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তা পরিবারের সদস্যরা। রাতে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন কালভার্টের পাশে ঝোপের মধ্যে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে। মেয়ের লাশ দেখে দুনিয়ায় থেকেও যেন নেই তার বাবা। কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সোহাগী জাহান তনু নেই, আছে শুধু তার স্মৃতি। বেঁচে আছে তার ফেসবুক পেজ আর সেখানে আপলোড করা নানা ছবি ও ভিডিও। সেখানেই পাওয়া গেল তনুর একটি ভিডিও, যেখানে গিটার বাজিয়ে গান গাওয়ার চেষ্টা করছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের মেধাবী সেই ছাত্রীটি। তনুর শেষ আপলোড করা ছবিগুলোর নিচে এখন শুধু বিদায়ের সুর।
২৫ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম