লক্ষ্মীপুর : সাপের কামড়ে মৃত ব্যক্তিকে বাঁচাতে কেরামতি করছেন ওঝারা। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদরে। মাসুদ আলম নামে এক যুবক চার দিন আগে সাপের কামড়ে মারা যান। ওঝাদের কেরামতির কারণে তাকে দাফন করা হচ্ছে না। ওঝারা মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করার আশ্বাস দিয়ে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে যাচ্ছেন।
মাসুদ সদর উপজেলার শাকচর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।
এদিকে সাপের কামড়ে মৃত মাসুদকে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে বাঁচিয়ে তোলার ব্যর্থ চেষ্টায় জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করার খবরে ওই গ্রামে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ।
নিহতের স্বজনরা জানান, সোমবার রাতে বাড়ির পাশের একটি খালে মাসুদ আলম মাছ ধরতে যান। খালে নামতেই পা পিছলে সাপের গায়ে পা পড়ে মাসুদের। মুহূর্তেই বিষধর সাপ তাকে কামড় দিলে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।
তারা জানান, পরে তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে নেয়ার পথে মারা যান তিনি।
স্বজনরা জানান, তার লাশ বাড়িতে আনা হলে মাসুদ মরেনি, বেঁচে আছে— এমন দাবি করেন একই উপজেলার চররমণী গ্রামের ওঝা রৌশন আলী। এরপর মাসুদের লাশটি বাড়ির উঠানের একটি চেয়ারে বসিয়ে মাথায় থালা-বাটি, পায়ে মুরগির বাচ্চা ও কোমরে সাদা কাপড় বেঁধে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে যাচ্ছেন ওঝা রৌশন আলী।
চারদিন ঝাড়-ফুঁক দেয়ার পর মাসুদকে সুস্থ দেখতে না পেরে দিয়ে স্থানীয়রা রৌশন আলীর তন্ত্র-মন্ত্রের প্রতি আস্থা হারিয়ে ভোলার লালমোহনের দুই ওঝাকে খবর দেন।
মাসুদকে বাঁচিয়ে তুলতে ওঝাকে দেয়া হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা। বাড়ির সামনে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে এ টাকা তোলা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। বিষয়টি প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা সির্ভিল সার্জন ডা. মো. গোলাম ফারুক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, মৃত ব্যক্তিকে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে কখনো জীবিত করা যায় না। এটা ওঝাদের মিথ্যা আশ্বাস। সাপে কাটলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিতে হয়। এন্টিবেনাম ইনজেকশন দিতে হয়। ইনজেশনটির দাম ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
এমন খবরে দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন জেলার সহকারী পুলিশ সুপুার (সার্কেল এএসপি) মোহম্মাদ নাসিম ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ভূঁইয়া।
তারা লাশ দাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। ওঝাদের আটকের চেষ্টাও করছেন বলে জানান ওসি।
১৭ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম