লক্ষ্মীপুর : ‘আমারে বুড়ো বরের ঘরে পাঠাতে চায়, আমি বিয়ে করব না। আমি স্কুলে যেতে চাই। বাবা-মা আমার ভালো চায় না। তারা টাকার কাছে বেচা হয়ে গেছে। আমাকে বাঁচান সাংবাদিক ভাইয়েরা’।
সোমবার দুপুরে রায়পুর উপজেলার চরমোহনা গ্রামের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী নাসরিন সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই আকুতি জানায়।
চরমোহনা গ্রামে বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই গ্রামে গেলে এলাকাবাসী জানান, নাসরিন চরমোহনা সুলতানীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। তার পিতা আহছান উল্যা মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছে। পাশের গ্রামের কাজি বাড়ির রুহুল আমিন কাজির প্রবাসী ছেলে সোহাগের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়।
সোমবার বিয়ে উপলক্ষে সব আয়োজনও সম্পন্ন করা হয়। দলে দলে অতিথি আসতে দেখে নাসরিন অবিরাম কান্না শুরু করে।
এ খবর জানতে পেরে নাসরিনের বান্ধবীসহ প্রতিবেশীদের কয়েকজন বলে, নাসরিন কিছুতেই বিয়ে করবে না। পিতা মেয়েকে মেরে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেবে এমন হুংকারে নিরুপায় নাসরিন।
বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সচেতন এলাকাবাসী নাসরিনের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেখানে গিয়ে শিশু নাসরিনের বাবার একগুঁয়েমি আচরণে ফিরে আসেন শিক্ষক আব্দুল মান্নান।
পরে এলাকার মেম্বার ও সাংবাদিকদের কাছে খবর পৌঁছে যায়। ইউপি মেম্বার, গ্রামপুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে অন্য একটি প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে কনে সাজিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেন নাসরিনের মা-বাবা।
এসময় সেখানে জড়ো হওয়া এলাকাবাসীর একজন চুপিসারে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে বন্ধ হয়ে যায় বিয়ের সব আয়োজন।
চরমোহনা সুলতানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, মেয়েটি আমার স্কুলের মেধাবী ছাত্রী। মেয়েটির সহপাঠিদের কাছ থেকে খরব পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিয়ে বন্ধ রাখতে অনুরোধ করি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, আমি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বাইরে ছিলাম। এলাকার গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যকে পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছি।
১ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম