মানিকগঞ্জ : বৃহস্পতিবার দুপুরে ছিল সায়েমের বার্ষিক শেষ পরীক্ষা। আর সকালের দিকেই তার বাবা আফজাল হোসেন মারা যান। মৃত্যুর আগে সায়েমের বাবা বলতেন, ভাল করে পড়ালেখা করে অনেক বড় হবে। সেই খেয়াল থেকেই মেধাবী ছাত্র সায়েম বাড়ির উঠানে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
মো. সায়েম ঘিওর উপজেলার ২৫ নং বানিয়াজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
সায়েমের চাচা শাকিব হাসান বলেন, তার ভাই আফজাল মিয়া (৫০) লিভারের টিউমারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সে স্থানীয় মুন্নু ফ্রেবিক্স লিমিটেডে ইলেকট্রিসিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসা করতে গিয়ে তার পরিবার একেবারে নিঃস্ব। তার একমাত্র ছেলে সায়েম।
সায়েমের শ্রেণী শিক্ষক সামছুন নাহার বলেন, পরীক্ষার্থী সায়েমের বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা ভীষণভাবে মর্মাহত। তাকে মানবিক কারণে বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষা না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মেধাবী সায়েম পরীক্ষা দিবেই। তাই তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে আজকের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সান্ত্বনা ও সাহস জুগিয়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বাবুল মিয়া বলেন, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ছেলে পরীক্ষা দিতে এসেছে। বিষয়টি জানার পর আমরা ওই ছাত্রকে বুঝানোর পরও সে বলে স্যার আমি সিক্সে উঠব। তাই ফাইনাল পরীক্ষা দেবই। পরীক্ষা শেষে ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছি।
পরীক্ষা শেষ করার পর শিক্ষকরা সাথে করে সায়েমকে নিয়ে তাদের বাড়িতে যান। বাড়িতে মৃত আফজালের স্বজনের আহাজারিতে ভেঙে পড়ে সায়েমও।
সায়েমের চাচা শাকিব হাসান জানান, বিকেলে সায়েমের পিতার মরদেহ কবরস্থ করা হয় স্থানীয় কবরস্থানে।