ময়মনসিংহ: জীবনের শেষ বেলায় এসে তার আর কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। কেবল নিয়মিত তিন বেলা ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে চান অবশিষ্ট দিনগুলো। রোববার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এমন আকাঙ্ক্ষার কথা প্রকাশ করেন ময়মনসিংহে সন্তানদের অবহেলায় গোয়ালঘরে থেকে শিয়ালের কামড়ে আহত মা মরিয়ম নেছা (৯০)। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা মরিয়ম নেছা খুব বেশি কথা বলতে পারছেন না। তার অবস্থা জানতে চাইলে ক্ষীণ কণ্ঠে বলেন, আগের চেয়ে একটু ভালো। হাতের মুঠো দেখিয়ে বলেন, ‘আমারে তিন বেলা একটু ভাত দিলেই অইব।’
গত ২৯ মে পরিবর্তন ডটকমে ওই মাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই মাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েকদিনের চিকিৎসায় ওই মায়ের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
মরিয়ম নেছার ছোট ছেলে মারফত আলী বলেন, ‘আমাদের অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে। আর এমন ভুল হবে না। পৃথিবীর কোনো ছেলে যেন মায়ের সঙ্গে এমন আচরণ না করে।’
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার বলেন, অপুষ্টির কারণে তিনি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তার চিকিৎসা চলছে। বয়স বেশি হওয়ায় সুস্থ হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।
মরিয়ম নেছার তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। ১৯৭৫ সালে স্বামী মারা যান। কয়েক বছর আগে ছেলেদের অবহেলায় বাধ্য হয়ে ভিক্ষা শুরু করেন তিনি। কিন্তু হাঁটার ক্ষমতা হারানোর পর থেকে এক ছেলের গোয়ালঘরে থাকতেন। এক রাতে শেয়াল এসে ওই মায়ের পায়ের অংশ খুবলে নেয়। মাকে দেখাশোনা করতে অবহেলার অভিযোগে গত ৩০ মে গ্রেপ্তার করা হয় মরিয়মের বড় ছেলে মোখলেছ আমিনকে।
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস