নিউজ ডেস্ক: ‘এক হাজার টাকার ভাংতি আছে?’ প্রশ্ন শুনে দোকানদার তাকালেন। দেখলেন দুই বিদেশি নারী-পুরুষ দাঁড়িয়ে আছেন তার দোকানের সামনে। ভাংতি আছে। তাই বিদেশি মেহমানদের ছোট্ট এই উপকার করতে চাইলেন। মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে ক্যাশ বাক্স খুললেন। আর তখনই হাতে থাকা এক হাজার টাকার নোটটি দোকানদারের নাকে ঘষে দিলেন বিদেশিদের একজন।
মুহূর্তেই জ্ঞান হারালেন দোকানদার। অতঃপর আস্তে ধীরে ক্যাশ বাক্সে থাকা সব টাকা ব্যাগে ভরে চম্পট দিলেন বিদেশি ও বিদেশিনী!
শুক্রবার সন্ধ্যায় এমন অভিনব পন্থায় ময়মনসিংহের ত্রিশালে বেশ কয়েকটি দোকান লুট করেছেন তারা। উপজেলার একাধিক বাজারে এমন কাণ্ড ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েন সাধারণ মানুষের হাতে। তাদের মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা।
এর পর দুদিন ধরে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ অপরাধ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে নগদ টাকা ও একটি প্রাইভেটকার।
ত্রিশাল থানার ওসি জাকিউর রহমান জানান, গ্রেফতার দুই ব্যক্তি ইরানি নাগরিক। নাম শাহরাম ফাইয়ুজ (৪০) ও আজিতা গান্দ্রি ভাফা (৩৫)। তারা উভয়ে স্বামী-স্ত্রী।
বিদেশি নাগরিক হওয়ায় তাদের আটকের বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই দুদিন ধরে এলাকাবাসীর বক্তব্য যাচাই-বাছাই শেষে তাদের প্রতারণার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর মামলা নেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি।
জাকিউর রহমান আরও জানান, রোববার দুপুরে ইরানি দম্পতিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য ওসি (তদন্ত) ফায়জুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ত্রিশালের চকরামপুর বাজারে আবু তালেবের বিকাশের দোকানে গিয়ে মোবাইল কার্ড চান শাহরাম ফাইয়ুজ (৪০) ও আজিতা গান্দ্রি ভাফা (৩৫)। তালেব কার্ড দিতে গেলে শাহরাম হাতে থাকা ৫০০ টাকার নোট দেয়ার সময় তার নাকে ঘষে দেন। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে তালেব দেখেন তার ক্যাশ বাক্স থেকে ৭৬ হাজার টাকা গায়েব।
এ সময় আবু তালেব চিৎকার করে আশপাশের লোকজন জড়ো করেন। ওদিকে তালেবকে অজ্ঞান করে একটু দূরে বাবুলের দোকান থেকে একই কায়দায় ২৩ হাজার টাকা নিয়ে পালানোর সময় এলাকাবাসী দুই ইরানিকে গাড়িসহ আটক করেন। গণধোলাইয়ের একপর্যায়ে ত্রিশাল থানা পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার ও আটক করে। এর পর আশপাশের আরও কয়েক জায়গা থেকে একই রকম অভিযোগ আসে থানায়। আটক শাহরাম ও আজিতার কাছ থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।- যমুনা টিভি
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস