ময়মনসিংহ থেকে: স্বামীর সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় এক গৃহবধূকে আটকে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে মা হাবিলা বেগম (৫০) এবং তার মেয়ে টুকুনি বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে শনিবার রাতে নির্যাতিত গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের সোলেমান মন্ডলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারের (৩০) সঙ্গে প্রতিবেশী শহিদ মিয়ার পরকীয়ার সন্দেহে শহিদ মিয়ার স্ত্রী টুকুনি বেগম ও তার মা হাবিলা আক্তার শনিবার সকালে গৃহবধূ সেলিনা আক্তারকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাকে ঘরে আটকে রেখে নৃশংসভাবে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
এমনকি নির্যাতনের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ঘটনার পরপরই ভিডিওচিত্র ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়। এরপর খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। নারী কর্তৃক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও দেখে নানাজন নানা রকমের মন্তব্যের পাশাপাশি প্রকাশ্যে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
ভিডিওতে দেখা যায়, নির্যাতিত গৃহবধূকে টুকুনি বেগম ও হাবিলা আক্তারসহ অন্যরা মাথার চুল কেটে, নাকে-মুখে কালি মেখে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঠিপেটা করতে করতে রাস্তায় ঘোরাচ্ছে। নির্যাতনের সময় গৃহবধূর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানেও জখম করা হয়।
এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী সোলেমান মন্ডল দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম জানান, নির্যাতিতা গৃহবধূর শরীর এবং গোপনাঙ্গে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুস্থ হতে সময় লাগবে।
ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এস এ নেওয়াজী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী সোলেমান মন্ডল থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত শহিদ মিয়ার স্ত্রী টুকুনি বেগম এবং তার মা হাবিলা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত গৃহবধূ সেলিনা আক্তারের জবানবন্দি গ্রহণ করেছে পুলিশ।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি