ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) : আবুল হোসেন বুলবুল, পেশায় রিকশা ভ্যান গ্যারেজ মেকানিক। দরিদ্র এই গ্যারেজ মালিক সারাদিন ভাড়া খেটে রোজগার করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোনোরকম বেঁচে থাকেন। নৌকাপ্রেমী এই বুলবুল প্রচারণায় নেমেছে সম্পূর্ণ নিজস্ব ভঙ্গিতে। প্রার্থীর কাছ থেকে কোনো ধরনের খরচ না নিয়ে দিনরাত নৌকার প্রচারণায় পার করছেন দশদিন যাবৎ। নিজের গ্যারেজ থেকে একটি ভ্যান সাজিয়ে অবিরাম প্রচারণা চালাচ্ছেন উপজেলাব্যাপী। ময়মনসিংহের ত্রিশালের আমিরাবাড়ি ইউনিয়নের এই নৌকাপ্রেমীর প্রচারণায় ভিন্ন আমেজ ফিরে এসেছে নৌকার প্রার্থী সমর্থকদের মাঝে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ময়মনসিংহ ৭ (ত্রিশাল) আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের মনোনীত প্রার্থীগণ তাদের দলের প্রতীক নিয়ে ভোটারদের দুয়ারে ভোট চাচ্ছেন। নিজ নিজ দলের সফলতার কথা এবং ক্ষমতায় গেলে জনগণের উন্নয়নে তাদের ভূমিকা নিয়ে তুলে ধরছেন নানা প্রতিশ্রুতি। নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ করতে গিয়ে টাকা পয়সার হিসেব না করেই দেদারছে খরচ করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা আর অনুপ্রেরণা ছাড়া মাঠে পাওয়া যায় এমন কর্মীর সংখ্যা খুবই কম।
এই ব্যতিক্রমী নৌকাপ্রেমী কর্মী খুঁজে পাওয়া গেল ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের দরিদ্র বুলবুলকে। বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে বুকে ধারণ করেছে নৌকার শ্লোগান। তাই শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে নিজেই ভ্যান নিয়ে নিরলস প্রচারণা চালাচ্ছেন দিনরাত। সমগ্র উপজেলা ঘুরে ভোট চাইছেন নৌকার পক্ষে। প্রচারণার ১০ দিন পেরিয়ে গেলে টের পান প্রার্থীর কর্মীর সমর্থকরা। পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাকে নিয়ে এসে নৌকার প্রচারণার জন্য তাকে দৈনন্দিন খরচ দিতে চাইলে ফিরিয়ে দিলেন তাদের কথা।
স্পষ্টভাবে বলে, দেন আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসি, শেখ হাসিনাকে ভালবাসি, নৌকাকে ভালবাসি। শেখ হাসিনা আমাদের শান্তিতে রেখেছে এদেশের মানুষকে আরাম আয়েশে বসবাসের সুযোগ দিয়েছে। আমি আমার জমানো টাকা দিয়ে ৩০ তারিখ পর্যন্ত নৌকার প্রচারণা চালিয়ে যাব।
খবর পেয়ে ত্রিশাল উপজেলা মহাজোট প্রার্থী রুহুল আমিন মাদানীর ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাছান মাহমুদ ছুটে যান নৌকা প্রেমী বুলবুলের খোঁজ নিতে। তিনি বুলবুলকে নৌকা প্রচারণায় নিজে থেকে সহযোগিতার কথা বললেও নিতে আপত্তি জানান।
হাসান মাহমুদ বলেন, আমি বুলবুলের প্রচারণায় মুগ্ধ হয়ে তার খোঁজ নিতে গেলে তিনি আমাকে ভালবেসে বুকে টেনে নেন। উন্নয়নের সরকার শেখ হাসিনা প্রতি কৃতজ্ঞতা ও বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসেই সে এই প্রচারণা করছেন বলে আমাকে বিদায় দেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বুলবুলকে সাইনবোর্ড এলাকা প্রচারণাকালে কথা হয় এ প্রতিনিধির সাথে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে এ দেশ উপহার দিয়েছে। তার মেয়ে আমাদের শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ দিয়েছে। কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই এই প্রচারণায় নেমেছি। আমার স্ত্রী সন্তানের জন্য গচ্ছিত টাকা থেকেই এ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রার্থীর কাছ তেখে বিনিময়ে প্রচারণা করে আমি শেখ হাসিনার সাথে প্রতারণা করতে পারবে না।