ময়মনসিংহ থেকে : নবজাতকের পিতৃত্ব নিয়ে ৫ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাটে।
জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগ নিয়ে থানায় হালুয়াঘাট আসে ১৮ বছরের কিশোরী। তার অভিযোগ ছিল বাউসা গ্রামের আক্তার উদ্দিনের পুত্র ইলিয়াসের বিরুদ্ধে।
তার বাড়ির পাশে একটি মসজিদের ইমামতি করার সুবাদে ইলিয়াস প্রায়শই তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করার কারণে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ইলিয়াস প্রায়শই মেলামেশা করত কিশোরীর সঙ্গে।
একপর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের চাপ দেয় ইলিয়াসকে। অতঃপর বিভিন্ন কৌশলে ইলিয়াস কালক্ষেপণের একপর্যায়ে অস্বীকার করেন কিশোরীর পেটের সন্তানকে। এই অবস্থায় বিয়ের দাবি নিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নিতে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য তাছলিমাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় হাজির হয় কিশোরী।
পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সংবাদকর্মীদের সামনে কিশোরীর এমন অভিযোগ অস্বীকার করলেও শেষ পর্যন্ত ইলিয়াছ তার সঙ্গে আংশিক প্রণয়ের কথা স্বীকার করলে দুপক্ষের স্বজনদের উপস্থিতিতে থানায়ই ধুমধাম করে বিয়ে সম্পন্ন হয় তাদের।
এ সময় ইলিয়াছের বাবা এবং তার নিকটাআত্মীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম তালুকদার খোকনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর ভালোভাবেই দিন কাটছিল তাদের।
ঘটনার প্রায় দুই মাস পরে ওই কিশোরী সন্তান প্রসব করে। এরপরই নবজাতকের পিতৃত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলে ওই কিশোরী নিজেই। অভিযোগের তীর যায় করুয়াপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলীর পুত্র ধারা বাজারস্থ তোহা কসমেটিকসের মালিক আলাল মিয়ার (৩৫) দিকে।
ওই কিশোরী বাদী হয়ে গত ১৭ এপ্রিল সন্তানের পিতার দাবি নিয়ে আলাল, ইউপি সদস্য তাছলিমাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
নবজাতকের পিতা আলাল মিয়া, নতুন করে এই দাবি কেন তুলছেন এমন প্রশ্নে ওই কিশোরী বলেন, আমি কসমেটিক কিনতে আলালের দোকানে গেলে দোকানের আলমিরার পেছনে নিয়ে জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণ করে। এতে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। আমার সন্তানের প্রকৃত পিতা আলাল।
তিনি বলেন, কিন্তু ৮নং নড়াইল ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য তাছলিমা খাতুন তাকে ফুঁসলিয়ে সেদিন ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করতে বাধ্য করান।
মামলার মূল বিবাদী আলাল মিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে উদ্যেশ্য প্রণোদিত হয়ে মিথ্যা রটনা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলে জানান।
এই ঘটনার বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এই কিশোরী ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগ করলে তিনি ইলিয়াস ও তার অভিভাবকদের থানায় ডেকে নিয়ে আসেন, পরে ছেলে ও মেয়ের সম্মতিক্রমে উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ইসলামী নিয়মানুযায়ী তাদের বিয়ে হয়।