ময়মনসিংহ: দেশে করোনাভাইরাস সং'ক্রমণের শুরুতেই মানুষকে সচেতনসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ তাছাড়া নিজের ইউনিয়নের অ'সহায় ও কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন আবু হানিফা। একপর্যায়ে তিনিই আক্রা'ন্ত হন করোনায়। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। দুইদিন পর আক্রা'ন্ত হন স্ত্রী নাজমা বেগম। দুই দফায় পরীক্ষার পর নেগেটিভ হওয়ায় আজ বুধবার দুইজনকেই ছাড়পত্রসহ অভিনন্দন দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
করোনায় আক্রা'ন্তের পর এই দম্পত্তি নিজ বাসাতেই চলে যান আইসোলেশনে। কিন্তু বাধ সাধে তাঁদের চার বছর বয়সি সন্তান ফাইজা হানিফা তোয়া। কারণ সে তখনো পুরোপুারি নির্ভরশীল মায়ের ওপর। কিন্তু নির্মম বাস্তবতা তাদেরকে মেনে নিতে হয়। পাশের রুম থেকে দুই সন্তানের কা'ন্না তাদেরকে অস্তির করে তোলে। স্বামী-স্ত্রী দুইজনই অ'সহায়বোধ করতে থাকেন। পরস্পরের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলেন। এভাবে কে'টে যায় কয়েকদিন। সন্তানদের ভ'য় দেখালে ছুটে আসতে চায় মা-বাবার কাছে। কিন্তু জগদ্দল পাথর বুকে চে'পে ধ'রে মানসিক শক্তি পেতে থাকেন। শুরু হয় করোনার বিরুদ্ধে ওই দম্পত্তির যু'দ্ধ। এক সময় জয়ী হয়ে বের হয়ে আসেন যার যার রুম থেকে। অনেক দিন পর মা বুকে তুলে নেন নাড়ি ছেড়া ধন দুগ্ধপোষ্য শিশু তোয়াকে। জানালেন তাদের যু'দ্ধ জয়ীর কথা।
চেয়ারম্যান আবু হানিফা জানান, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও সর্বক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করতে কাজ শুরু করেন তিনিসহ আরো কয়েকজন। এর মধ্যে গত ২০ মে নিজেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। জ্বর, কাশিসহ শরীরে ব্যাথা অনুভব করতে থাকেন। পরো করোনা পরীক্ষার পর ২৩ মে রেজাল্ট আসে পজিটিভ। পরদিন স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যরা ছাড়া প্রশাসনের অনেকেই পরীক্ষা করান। সেখানে স্ত্রী নাজমারও করোনা পজিটিভ আসে। তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রীর করোনা পজিটিভ আসার পর বাসায় থেকেই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেন। বাসার একটি কক্ষে দুই জনেই আসোলেশনে চলে যান। দুই সন্তান থাকে মা-বাবার কাছে। এক রুমে থাকলেও দূরত্ব বজায় রাখতাম। আমাদের প্লেট, গ্লাসসহ সবকিছুই ছিল আলাদা। তবে প্রথম কয়েকদিন আমাদের খুবই কষ্ট হয়।
করোনা চিকিৎসা খাবার প্রসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী জানান, তারা প্রেটিন ও ভিটামিন 'সি' সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খেয়েছেন। সেই সঙ্গে পানির সঙ্গে আদা, কালো জিরা, মধু, রসুন ও লবন দিয়ে গরম করে পান করেছেন। এ ছাড়া সব সময় গরম পানির ভাপ নিতেন ও পান করতেন। মনোবলটা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী।
সর্বশেষ তারা জানান, এখন তারা প্রস্তুত আক্রা'ন্ত রোগীদের বাঁ'চাতে নিজেদের প্লাজমা দেওয়ার জন্য। জানা যায়, চেয়ারম্যান আবু হানিফার র'ক্তের গ্রুপ 'এবি' পজিটিভ এবং স্ত্রী নাজমার 'ও' পজিটিভ।