রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১৬, ০৭:৫৩:৪০

শিশুর পেট দিয়ে ঢুকিয়ে পিঠ দিয়ে ছুরি বের করে নরপশু

শিশুর পেট দিয়ে ঢুকিয়ে পিঠ দিয়ে ছুরি বের করে নরপশু

ময়মনসিংহ : এক নরপশুর কাণ্ড! পাওনা টাকা চাওয়ায় ১৭ মাসের এক শিশুর পেট দিয়ে ঢুকিয়ে পিঠ দিয়ে ছুরি বের করে মানুষরূপী এক নরপশু। এমন দৃশ্য কেউ দেখেছেন কি না সন্দেহ।  মানুষ এমন কাজ করতে পারে বিশ্বাস করতে পারেন?

নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলে।  

বিথী নামে ১৭ মাসের এক শিশুকে ছুরিকাঘাত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে ছুরিটি তার পেট দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়।  শিশুটি বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চণ্ডীপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  আহত শিশুটি একই এলাকার দ্বীন ইসলামের মেয়ে।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার চণ্ডীপাশা গ্রামের দ্বীন ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের দশালিয়া গ্রামের শাহজাহানের যৌথ ব্যবসা ছিল।  ব্যবসা থেকে দ্বীন ইসলামের অনেক টাকা আত্মাসাত করেন শাহজাহান।

তারা জানান, এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।  রোববার সকালে পাওনা টাকা চাইতে গেলে প্রথমে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।  এর একপর্যায়ে দ্বীন ইসলামকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করেন শাহজাহান।  কিন্তু ছুরিটি দ্বীন ইসলামের কোলে থাকা শিশু বিথীর পেট দিয়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়।  স্থানীয়রা শিশুটিকে দ্রুত নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।  পরে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বিথীর মা বিউটি আক্তার জানান, তিনদিন হলো তার অপারেশন করে আরেকটি মেয়ে সন্তান হয়েছে।  ঠিকমতো উঠতে-বসতে পারছেন না তিনি। ৭-৮ বছর আগে জমি বিক্রি করে ১৬ লাখ টাকা নিয়ে স্বামী দ্বীন ইসলাম পার্শ্ববর্তী দশালিয়া গ্রামের শাহজাহান ওরফে পুইট্টা শাহজাহানের সঙ্গে ঢাকায় যৌথ ব্যবসা শুরু করেন।  শাহজাহান ব্যবসা থেকে অনেক টাকা আত্মসাত করেছেন।

তিনি জানান, বারবার তাগাদা দেয়া হলেও শাহজাহান টাকা দিচ্ছিলেন না।  এ নিয়ে দ্বীন ইসলামের সঙ্গে বিরোধ ছিল।  শাহজাহান তার স্বামীকে মেরে ফেলার জন্য লোকও লাগিয়েছিল।  কিন্তু পারেনি।  এখন তার মেয়েকে ছুরি মেরেছে।  আমি এর বিচার চাই।

শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তুহিন জানান, প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর শিশুটির পেটের ভেতর থেকে ছুরিটি বের করা হয়েছে।  এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।  এখনো তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি।

নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল জলিল বাংলামেইলকে বলেন, ‘দুই যুগ ধরে অ্যাম্বুলেন্স চালাই। কত মারামারি কাটাকাটির রোগী আনা নেয়া করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত এমন দৃশ্য দেখি নি। ছুরিটা পেট দিয়ে ঢুকে পিট দিয়ে বের হয়ে গেছে। মানুষ এমন কাজ করতে পারে আমার বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বাংলামেইলকে জানান, পাওনা টাকা নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তিনি। তবে সঠিক তদন্ত ছাড়া বিস্তারিত বলা যাবে না। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।

১৩ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে