মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এখন পর্যন্ত মূল সেতুর ৫৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ করার টার্গেট ছিল। এখন সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে। আগামী সপ্তাহে এটি স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্ট প্রকৌশলীরা। প্রথম স্প্যান বসানোর সাড়ে তিন মাস পর দ্বিতীয় স্প্যান বসানো হচ্ছে। এটি স্থাপিত হলে ৩০০ মিটারে দাঁড়াবে মূল সেতুর অবকাঠামো। পদ্মা সেতুতে ৪১টি স্প্যান বসানো হবে।
দায়িত্বশীল একাধিক প্রকৌশলী সমকালকে জানান, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগে রঙের চূড়ান্ত কাজ শেষে '৭বি' নম্বরের দ্বিতীয় স্প্যানটি গতকাল মঙ্গলবার মাওয়া প্রান্তের পদ্মাতীরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বুধবার বিকেলে সমকালকে জানান, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় স্প্যান বসানোর সুনির্দিষ্ট তারিখ বলা যাবে। তবে দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, আগামী ১৫ অথবা ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারে (খুঁটি) বসানোর কথা রয়েছে। এ জন্য প্রকল্প এলাকায় এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
মূল সেতুর কর্মযজ্ঞে যুক্ত দায়িত্বশীল একাধিক প্রকৌশলী জানান, স্প্যান বসাতে জাজিরা প্রান্তের ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারের ওপরে সিমেন্টের মিশ্রণ গ্যারোটিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারের ওপর প্রথম স্প্যান বসানো হয়।
অন্যদিকে সেতুর পাইল স্থাপন চলছে হরদম। গত ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সেতুর ৮৮টি পাইল বসে গেছে। বটম পাইল বসানো হয়েছে আরও ১০টি। অন্যদিকে জাজিরা প্রান্তের মতো মাওয়া প্রান্তেও পিয়ার স্থাপনের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। বর্তমানে মাওয়া প্রান্তের এক নম্বর পিয়ারের পাইল রিবারের কাজ চলছে। এ ছাড়া একই প্রান্তের অন্যান্য পিয়ারের পাইল স্থাপনের কাজও চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ৩৬০০ টন ওজনের হ্যামার দিয়ে পাইল ড্রাইভ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুর জন্য সব মিলিয়ে ৪২টি পিয়ার নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি। ২৫২টি পাইলের ওপর স্থাপিত হবে ৪২টি পিয়ার। এর মধ্যে ৪০টি পিয়ার থাকবে পানিতে আর ডাঙায় সংযোগ সড়কের সঙ্গে সেতুকে যুক্ত করতে বাকি দুটি পিয়ার নির্মাণ হবে। ছয়টি মডিউলে বিভক্ত থাকবে সেতু। মাওয়া প্রান্তে এক হাজার ৪৭৮ মিটার ভায়াডাক্ট (ঝুলন্ত পথ) থাকবে। জাজিরা প্রান্তে থাকবে এক হাজার ৬৭০ মিটার। এই ঝুলন্ত পথগুলো সেতুকে অ্যাপ্রোচ সড়কের সঙ্গে যুক্ত করবে।-সমকাল
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস